কে এই দিব্যেন্দু? তিনি বর্তমানে কাঁথির প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারীর ছেলে এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর ভাই। দিব্যেন্দু এখন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ।
শিশির এবং দিব্যেন্দু খাতায় কলমে তৃণমূল সাংসদ হলেও তাঁদের সঙ্গে এখন বিজেপির সখ্য অনেক বেশি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে দুজনকে কাঁথিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাতেও দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকেই তাঁদের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ে। বাবা এবং ছেলের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার তৃণমূল পরিষদীয় দল স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠিও দিয়েছে। বিষয়টি স্পিকারের বিবেচনাধীন।
প্রশ্ন উঠেছে, কাঁথিতে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শিশির অধিকারীর পরিবর্তে দিব্যেন্দুর নাম কেন প্রস্তাবিত তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে কি শিশির এবার আর টিকিট পাচ্ছেন না? সে ক্ষেত্রে তাঁর বয়স একটা ফ্যাক্টর।
আবার দলের অন্দরে এমন চর্চাও রয়েছে, শুভেন্দুকে খুশি রাখতেই তাঁর ছোট ভাইয়ের কথা কাঁথিতে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেছে। তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, যে শুভেন্দু তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে তাঁর পুরনো দলের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র্রের কথা বলেন। যিনি সব সময় তৃণমূল দলটাকে পিসি ভাইপোর দল বলে কটাক্ষ করেন, সেই তিনি কী করে ভাইয়ের নামে সিলমোহর দেবেন।
শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের তাবড় নেতারা তাঁর বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র নিয়ে সরব। তৃণমূল কাঁথির এই অধিকারী পরিবারকে সব দিয়েছে বলে বরাবর দাবি করা হয়। এমনকী খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত এখন প্রায়ই আক্ষেপ করেন, এটা আমারই ভুল। তিনি অবশ্য কখনও শুভেন্দুর নাম মুখে আনেন না। তাঁকে মমতা বরাবর কটাক্ষ করেন গদ্দার বলে। এই অবস্থায় বিজেপির প্রস্তাবিত প্রার্থী তালিকায় দিব্যেন্দুর নাম থাকায় অধিকারী সাম্রাজ্যের পরিবারতন্ত্রের দিকেই ফের আাঙুল উঠবে কি না, সেই প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে রাজনীতির আনাচে কানাচে। আবার কাঁথিতে বিকল্প হিসেবে শুভেন্দুর আর এক ভাই সৌমেন্দুর নামও প্রস্তাবিত তালিকায় রয়েছে। অধিকারী ভ্রাতৃদ্বয়ের মধ্যে যে নামই চূড়ান্ত হোক না কেন, পরিবারতন্ত্রের খোঁচা যে শুভেন্দুকে খেতেই হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের খুব একটা দ্বিমত নেই।