ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চালু হয়েছে গাছেদের অ্যাম্বুল্যান্স
গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান, উষ্ণ হচ্ছে পৃথিবী আর সবুজ প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আগে সচেতন করেছেন পরিবেশবিদেরা। এই সময়ে শুধু নতুন গাছ লাগানো নয়, পুরোনো গাছেদের যত্ন এবং পরিচর্যাও খুব প্রয়োজন।বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পরিবেশ রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বহু দেশ পিছিয়ে নেই আমরাও। এরকমই সময়ে বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চালু হয়েছে গাছেদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা!
সত্যি কথা বলতে কি নানা সময়ে এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নস্ট হয় বহু গাছ এমনকি নির্বিচারে কেটে ফেলা হয় তাদের। এই অ্যাম্বুল্যান্স তাদেরই তুলে নিয়ে গিয়ে নতুন করে মাটিতে পোঁতার ব্যবস্থা করবে।
আইডিয়াটি প্রথম এসেছিল পরিবেশ আন্দোলনকারী কে আবদুল ঘানির মাথায়। ভারতের সবুজ মানুষ, “গ্রিন ম্যান অফ ইন্ডিয়া” বলে পরিচিত আবদুল চল্লিশ লক্ষ গাছ পুঁতেছেন দেশে। একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে তিনি এই প্রস্তাব রাখলে, কাজ শুরু হয় বিষয়টি নিয়ে।
গাছেদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স কী রকম তাও কি সম্ভব কি ভাবে? কী ভাবেই বা কাজ করবে সেটি?
ভিন্ন ভাবে উপড়ে যাওয়া গাছকে নিয়ে গিয়ে অন্য জায়গায় লাগানোর পাশাপাশি, এই অ্যাম্বুল্যান্স বিভিন্ন জায়গায় বয়ে নিয়ে বেড়াবে নানা গাছের বীজও, এবং মানুষদের মধ্যে গাছ লাগানো-সংক্রান্ত সমস্ত রকম সচেতনতা ও সাহায্য করবে তারা গাছ মারা গেলে, তার অংশগুলো ঠিক জায়গায় পৌঁছেও দেবে তারা।
অ্যাম্বুল্যান্সেএর মধ্যেই থাকবেন দক্ষ মালি ও গাছ-কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে থাকবে বাগান করার নানা জিনিসপত্র, সার, জল, ঝারি, খুরপি ইত্যাদি।
এই প্রোজেক্টে বিশেষ ভাবে সহায়তাকারী বেসরকারি সংস্থা সাগার তরফে সুরেশকুমার যাদব বলেন- “একই সঙ্গে দূষণ বাড়ছে এবং গাছের সংখ্যা কমছে। এই অবস্থায় বড় বড় প্রাপ্তবয়স্ক গাছগুলির মৃত্যু বোধ হয় আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া মুশকিল। সে জন্যই, কোনও গাছ যাতে প্রাকৃতিক বা মানুষিক কারণে মরে না যায়, তাই সেগুলিকে রক্ষা করার এই উদ্যোগ এই সময়ে অত্যন্ত জরুরি বলে মনে হয়েছে আমাদের। যা যন্ত্রপাতি বা ওষুধপত্র দরকার, সে সবই আমরা রেখেছি অ্যাম্বুল্যান্সে। কোথাও থেকে গাছ তুলে এনে অন্য জায়গায় লাগানোর জন্যও অত্যাধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।”
গাছেদের অ্যাম্বুল্যান্স প্রকল্পের উদ্যোক্তা আব্দুল বাবু বলেন, “কত গাছ ঝড়ে উপড়ে যায়। পড়ে পড়ে মারা যায় সেগুলি। নতুন করে লাগানোর ব্যবস্থা করাই হয় না। এই অ্যাম্বুল্যান্স আর তা হতে দেবে না। হেল্পলাইনে ফোন করা মাত্র আমরা অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে পৌঁছে যাব, বিনামূল্যে গাছটিকে সরিয়ে আনব।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উপড়ে যাওয়াই নয়। অনেক সময়েই দেখা যায়, গাছের কারণে সমস্যায় পড়ছেন পথচারী বা শহরবাসীরা। সেগুলি কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। আমাদের জানালে আর এভাবে মারতে হবে না গাছগুলিকে। যত্ন করে তাদের সরিয়ে অন্যত্র বসাব আমরা।”
প্রকৃতির থেকে বড় শক্তি হয়তো কিছুই নেই। গাছেরা তাঁদের প্রাণ দিয়ে হারে হারে বুঝিয়ে দিয়েছে মানুষ কে। উষ্ণ প্রকৃতি অনা বৃষ্টি এদের থেকেও সবথেকে বড় শক্তি হোলো সবুজায়ন। সুতরাং গাছ লাগানো হোক আরো বেশি, প্রকৃতি থাকুক তার নিজের মতো করে।
গাছেদের অ্যাম্বুল্যান্স
