জমি জবরদখল রুখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতার কড়া বার্তা: ৬ মাসে পুনরুদ্ধার, কঠোর ব্যবস্থা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমি জবরদখল রোধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার, নতুন বছরের প্রথম প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে জানান যে, যারা সরকারি জমি জবরদখল করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “কোথাও যদি নতুন করে সরকারি জমি জবরদখল হয়, তবে আইসি, এসপি, বিডিও, জেলাশাসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রী, কাউন্সিলর বা পঞ্চায়েত যদি নিজের স্বার্থে এমন কিছু করেন, তাদের রেয়াত করা হবে না।”মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আগামী ৬ মাসের মধ্যে জমি পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এদিন, তিনি বেআইনিভাবে জবরদখল করা ফ্ল্যাটগুলির মিউটেশন ও পারমিশন নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশেষভাবে কসবা কাণ্ডের রেশ এখনও শেষ হয়নি, যেখানে জমি মাফিয়াদের প্রভাব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মমতা বলেন, “সরকারি জমিতে বাইরে থেকে এসে ফ্ল্যাট তৈরি করছে, বিক্রি করে চলে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”নতুন নীতি ও মানবিক দৃষ্টিকোণ:মুখ্যমন্ত্রী অবৈধভাবে তৈরি ফ্ল্যাটগুলিকে আইনি কাঠামোয় আনার জন্য একটি পন্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, “যারা জবরদখল হওয়া জায়গায় বসবাস করছেন বা দোকান চালাচ্ছেন, তাদের ৬ মাস সময় দেওয়া হবে। সরকারের তরফে একটা দাম নির্ধারণ করা হবে, এবং তিন ধাপে টাকা দিয়ে বেআইনি জায়গাগুলিকে বৈধ করা হবে।” তবে, যারা জমি জবরদখলে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন মমতা। কঠোর ব্যবস্থা:মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, যেসব মানুষ অবৈধভাবে ফ্ল্যাট বানিয়ে পালিয়ে গিয়েছে, তাদের ধরতে হবে। প্রয়োজনে ইডি বা সিবিআই-এর মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি ক্রোক করা হবে। তিনি বলেন, “কোনও নেতা-মন্ত্রীর তাঁবেদারি আমি সহ্য করব না।” এছাড়া, আধিকারিকদেরও সতর্ক করেন মমতা, যারা এমন কাজ করেছেন তাদের ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে এবং পেনশনের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বিশেষজ্ঞ কমিটি ও পরামর্শ:জমি জবরদখল রোধে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। কমিটিতে WBPS, WBCS, IPS-র কর্মকর্তারা থাকবেন। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জমি সার্ভে করার জন্য একটি অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার পরামর্শ দেন, যাতে দ্রুত ও সঠিকভাবে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা যায়।অরূপ বিশ্বাসও মনে করেন, জমি জবরদখল রুখতে RERA (ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়াল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি) আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং পুরসভা, পঞ্চায়েত ও RERA একযোগে কাজ করতে হবে।এভাবেই জমি জবরদখল রোধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা আরও একবার প্রশাসনের শক্তিশালী অবস্থানকে প্রমাণ করলো