পাকা ধানে মই দিল সাইক্লোন ‘দানা’! এবার ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে পড়তে হবে যে বাঁকুড়া জেলার মানুষকে
পাকা ধানে মই দিল ‘দানা’। ‘দানা’র প্রভাবে ধারাবাহিক বৃষ্টিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ল বাঁকুড়ার কৃষিক্ষেত্রে। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, গত ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র এই জেলায় ৫১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর তাতেই যা ক্ষতি হওয়ার হয়েছে। জেলার কৃষিজীবি মানুষের দাবি, বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে পড়ে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ধান, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মরশুমি সবজি চাষেও।
কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে উঠবেন সেটা ভেবেই আকুল তাঁরা। বাঁকুড়া-২ ব্লক এলাকার গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদী তীরবর্ত্তী বাঁকি, সেন্দড়া, সানবাঁধা এলাকার কৃষক দেবরাজ নন্দী, প্রশান্ত মাঝিরা বলেন, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা অবস্থা জমি থেকে ধান বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অবস্থা নেই বললেই চলে।
কীভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে উঠবেন সেটা ভেবেই আকুল তাঁরা। বাঁকুড়া-২ ব্লক এলাকার গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদী তীরবর্ত্তী বাঁকি, সেন্দড়া, সানবাঁধা এলাকার কৃষক দেবরাজ নন্দী, প্রশান্ত মাঝিরা বলেন, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা অবস্থা জমি থেকে ধান বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অবস্থা নেই বললেই চলে।
অতি বৃষ্টিতে সবজিও গলতে শুরু করেছে। সাধারণভাবে ধান বিক্রি করে সেই টাকায় আমরা আলু রোপন করি, এবার সেই সুযোগ মিলবে বলে মনে হয় না, মন্তব্য কৃষকদের। এমনকি প্রাকৃতিক দূর্যোগে সব সময় সরকারি ক্ষতিপূরণ মেলে না বলেও মন্তব্য করেছেন দেবরাজ নন্দী, প্রশান্ত মাঝির। এই অবস্থায় কিভাবে ধার দেনা শোধ হবে, কিভাবে পরবর্ত্তী চাষের জন্য প্রস্তুতিই নেবেন আর কিভাবে প্রাত্যহিক সংসার খরচ উঠে আসবে তা ভেবেই অস্থির বলে তারা জানান।
অন্যদিকে, একই ছবি জেলার বিষ্ণুপুর সহ পাত্রসায়র, কোতুরপুর, খাতড়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। এই এলাকার মানুষ ধানের পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে সব্জী চাষ করেন। এখানকার উৎপাদিত সব্জী জেলার চাহিদা মিটিয়ে কলকাতা সহ ভীন রাজ্যেও রপ্তানী হয়। কিন্তু এবার সেই সুযোগ বোধহয় বন্ধ। ‘ডানা’র প্রভাবে ওই এলাকার ফুলকপি, বাঁধা কপি, পটল, বেগুন সহ অন্যান্য মরশুমী সব্জী চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন লাভ তো দূর অস্ত খরচের টাকাটাও উঠে আসবে না বলে ওই এলাকার কৃষিজীবি মানুষেরা জানিয়েছেন। বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের গোবিন্দপুর গ্রামের এক চাষি রাখহরি দও জানান, ঘূর্ণিঝড় দানার অভাবে গত তিন দিনে যেভাবে বৃষ্টি হয়েছে আমার আট বিঘা জমির ধান একেবারে এক আঠু জলের তলায়। কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা কিছু। চাষ হলে তবে সংসার চলবে। পুরো জমি ধান জলের মধ্যে ডুবে রয়েছে। এখন কি করি কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছি না ।প্রশাসনের কাছে চাইছি কিছু সাহায্যের ব্যবস্থা। আমি ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত আকারে জানিয়েছি।
শুধু বাঁকুড়া কিংবা বিষ্ণুপুর নয়, কম বেশি দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই কার্যত ছবিটা এক। গত কয়েকদিন আগেই বন্যার জলে বিঘার পর বিঘার জমি নষ্ট হয়ে যায়। ব্যপক ক্ষতি হয় ফলনে। আর সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আছড়ে পড়ল সাইক্লোন দানা। আর তাতে একাধিক জেলায় ফলানো ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাঠে বৃষ্টির জল দাঁড়িয়ে নষ্ট হচ্ছে ধানও। এই অবস্থায় আগামিদিনে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। যা নিঃসন্দেহে চাপ বাড়াবে সাধারণ মধ্যবিত্তের পকেটেও।