পার্থের জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির দ্বিমত, মামলা গেল অন্য বেঞ্চে
কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ পাঁচজন অভিযুক্তের জামিনের শুনানি আজ। মামলাটি বিচারের জন্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর আদালতে পাঠানো হয়েছে। জামিনের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে গতদিন দুই বিচারপতির মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সকল অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন, তবে বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় কেবল কৌশিক ঘোষ, আলি শাহিদ ইমাম, চন্দন মণ্ডল এবং সুব্রত সামন্তদের জামিন দিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করেননি। এই দ্বিমত পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে চলে গেলে তিনি নতুন বেঞ্চ গঠন করার নির্দেশ দেন।
মামলার বিষয়ে বিশেষ কিছু অভিযোগ উঠে এসেছে, যার মধ্যে অন্যতম হল, কেন এতদিন রাজ্য সরকার সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর জন্য ‘কনসেন্ট’ বা অনুমোদন দেয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়। তিনি রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই মর্মে বিচারপতি বলেন, যে সকল সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিচার শুরু করতে কেন এত বিলম্ব করা হয়েছে, তা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা করা উচিত।
২০২২ সালে, ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) শিক্ষকদের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে। এর পর একে একে গ্রেপ্তার হন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক কুমার সাহা, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এবং কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এই মামলার মূল অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তাদের সাহায্যে এবং অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এই মামলার নতুন শুনানি হবে, যেখানে সমস্ত অভিযুক্তের জামিনের আবেদন বিবেচনা করা হবে। আগামী সময়ে মামলার পরবর্তী শুনানি কিভাবে এগিয়ে যাবে এবং আদালত কী রায় দেয়, তা সকলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই মামলার ফলাফল আগামী দিনগুলিতে রাজ্য সরকার এবং এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের জন্য বড় একটি প্রভাব ফেলতে পারে। বিচারপতিরা তাদের মতামত প্রকাশের মাধ্যমে মামলার সিদ্ধান্ত গ্রহণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।