ভারতের ব্রহ্মোস মিসাইলের চাহিদা বাড়ছে, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চুক্তি হতে চলেছে

ভারতীয় অস্ত্র শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে উঠে আসছে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র, যা ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে। এখন বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক থেকে ভারত অস্ত্র রফতানিকারকের তালিকায় শীর্ষস্থান লাভ করেছে, এবং ব্রহ্মোস মিসাইলের চাহিদা বিশ্বজুড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে, প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ভারত সফরে আসছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবোও সুবিয়ান্তো, এবং তাঁর সঙ্গে একটি চুক্তি সই হতে পারে, যার মধ্যে থাকবে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ।ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্রহ্মোস মিসাইলের এই চুক্তি ভারতের সামরিক কৌশল এবং বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা নীতি শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুবিয়ান্তো, যিনি ২০২০ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে মিসাইল কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, এবার তার দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষায় গুরুতর পদক্ষেপ হিসেবে ব্রহ্মোসের চুক্তিতে সই করতে চলেছেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইন্দোনেশিয়াকে মিসাইল সরবরাহ করা হবে।ফুলার প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে অংশ নিতে ইন্দোনেশিয়ার ৪০০ সেনা দিল্লিতে আসছেন, যা অতীতে কোনো অতিথি দেশ দ্বারা পাঠানো সেনার সংখ্যা সর্বাধিক। এটি ইন্দোনেশিয়ার ভারতীয় সম্পর্কের প্রতি গভীর অনুরাগ এবং সামরিক সহযোগিতার প্রতীক।ব্রহ্মোস মিসাইল বিশ্বের দ্রুততম ক্রুজ মিসাইল হিসেবে পরিচিত, যা সাড়ে তিন গুণ বেশি দ্রুত গতির। এটি জল, স্থল এবং আকাশ থেকে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে এবং প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দূর থেকে শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। মিসাইলটির ওয়ার হেডের ওজন ৩০০ কেজি এবং এটি শত কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে গিয়ে তার পথ হারায় না। এছাড়া এটি সমুদ্র থেকে উঁচু পাহাড় পর্যন্ত শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসী কার্যক্রমের কারণে সেখানে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলি চীনের আঞ্চলিক দাবির বিরুদ্ধে নিজেদের সুরক্ষা আরও শক্তিশালী করতে চাইছে। সেই কারণে তারা ব্রহ্মোস মিসাইলের দিকে তাকিয়ে আছে, যা তাদের নিরাপত্তা বাড়াতে এবং চীনের আগ্রাসন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।ইন্দোনেশিয়া, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হলেও, ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্কও রয়েছে, বিশেষত সনাতন ধর্মের ঐতিহ্যের সঙ্গে। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি হয়েছে এবং দুই দেশই বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করছে। ইন্দোনেশিয়া ভারতের কাছ থেকে এই মিসাইল কিনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে।এই চুক্তির মাধ্যমে ভারত কেবলমাত্র অস্ত্র রফতানি করে না, বরং একটি কৌশলগত জোট তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে যা দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের প্রভাব ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করবে।

Asia News https://asianewslive.in

Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.

You May Also Like

More From Author