ভুগছিলেন দুরারোগ্য ক্যানসারে, বাংলা সাহিত্যের দূত উইলিয়াম রাদিচের জীবনাবসান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানা সময়ের কবিতা তাঁর তর্জমায় পৌঁছে গিয়েছিল ইংরেজিভাষী পাঠকমহলে। সেই সঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ থেকে রবীন্দ্রনাথের ধ্রুপদী গল্প বা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ‘টুনটুনির বই’ও ভাষান্তরের জন্য বেছে নিয়েছিলেন। ইংরেজিভাষী বহির্বিশ্বে এ ভাবেই বাংলার ভাষা, সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ দূত হয়ে ওঠেন তিনি। বিলেতের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ‘স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ়’-(সোয়্যাস) এর বাংলা ভাষার অধ্যাপক তথা কবি, গবেষক, অনুবাদক উইলিয়াম রাদিচে রবিবার কেমব্রিজে প্রয়াত হয়েছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। উইলিয়ামের স্ত্রী এলিজ়াবেথের থেকে আসা ইমেলে তাঁদের বন্ধুবলয়ে খবরটি জানানো হয়। তাঁদের দুই কন্যা রয়েছেন। দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন এই কবি, অনুবাদক, গবেষক। ১০-১১ বছর আগে ইংল্যান্ডে গুরুতর দুর্ঘটনার জেরেও কিছুটা অশক্ত হয়ে পড়েন। রাদিচের মা বেটি রাদিচেও ছিলেন ধ্রুপদী ল্যাটিন সাহিত্যকর্মের বিশিষ্ট অনুবাদক ও সম্পাদক। তবু সত্তরের দশকের গোড়ায় উইলিয়াম অক্সফোর্ডে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়ার সময়েও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বোঝেননি, তিনি বাংলা শেখায় আগ্রহী হবেন। কারও কারও ধারণা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ঘিরে আলোড়নেই হয়তো বাংলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে তাঁর। তবে এর কিছু দিনের মধ্যে সোয়্যাস-এ বাংলা ভাষার ছাত্র হিসেবে উইলিয়ামের মতো মেধাবী এক জনকে দেখে শিক্ষকেরা চমৎকৃতই হয়েছিলেন। সেখানে অধ্যাপক তারাপদ মুখোপাধ্যায়ের মন্ত্রশিষ্য ছিলেন উইলিয়াম।