মনমোহন সিংয়ের মৃত্যু: ভারতীয় রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের শেষ
মনমোহন সিংয়ের মৃত্যু আমাদের সামনে এনে দেয় এক বিস্মরণীয় যুগের স্মৃতি, যা ভারতের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। একজন নির্বিকার, শান্ত ব্যক্তির অবদান—যিনি শুধুমাত্র কর্মে বিশ্বাসী ছিলেন—তাঁর মৃত্যু ভারতের ইতিহাসের এই অধ্যায়কে পুনরায় জীবন্ত করে তুলেছে। সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের অধীনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাঁর শান্ত কিন্তু দৃঢ় পদক্ষেপে ভারতে এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। ১৯৯১ সালের উদারনীতির সিদ্ধান্ত, ২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি, এবং একাধিক আর্থিক সংস্কারের মাধ্যমে তিনি ভারতকে বিশ্বের অন্যতম অর্থনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ‘অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ বা ‘ম্যাডামের রিমোট কন্ট্রোল’ জাতীয় কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছিল, মনমোহন সিং তাতে কান দেননি। তাঁর কার্যকলাপেই প্রকাশ পায় যে, তিনি কোনও বাহ্যিক চাপের তোয়াক্কা না করে দেশ ও জনগণের ভালোর জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম ছিলেন। ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর, মনমোহন সিং দেশের উন্নয়নে নিজের কার্যক্রমে প্রমাণ রেখেছিলেন। তবে তাঁর শাসনকাল শেষ হয়ে যাওয়ার পরও, তিনি মনে করিয়ে দেন, ইতিহাসের বিচার অনেক বড় ও দয়ালু। মনমোহন সিংয়ের প্রয়াণ ভারতের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি শূন্যতার সৃষ্টি করেছে, যা পূর্ণ হবে না।