মন্দারমণি সৈকতে ১৪০টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ। প্রবল চাপে ব্যবসায়ীরা

কাল, বুধবারের মধ্যে মন্দারমণির ১৪০টি হোটেল ভেঙে ফেলার জন্য চিঠি দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এই চিঠি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। হোটেল কর্তৃপক্ষকে নির্মাণ ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।

ডিসেম্বরে ভরা পর্যটন মরশুমের আগে এমন চিঠি পেয়ে মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের। তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেশন জোন)–এর নির্দেশ অমান্য করে মন্দারমণির সমুদ্র সৈকতে ওই সব হোটেল অবৈধ নির্মাণ করেছে বলে অভিযোগ।
গত এক দশকে মন্দারমণির ৪টি মৌজায় ১৩ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে হোটেলের সংখ্যা ৪০ থেকে বেড়ে এখন ২৬৫–তে এসে দাঁড়িয়েছে। যদি হোটেল মালিকরা নিজেরা হোটেল না ভেঙে দেন তা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা ভেঙে ফেলার ফরমান দিয়েছে প্রশাসন।

নোটিস পাওয়ার পরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মন্দারমণির হোটেল মালিক সংগঠন। ২০ নভেম্বর এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষজন।

সমুদ্র সৈকতে উপকূল নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করা শুধু নয়, খাস জায়গা দখল করে এমনকী পরিবেশ ধ্বংস করে হোটেল বা রিসর্ট তৈরির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেই ২০০৭ সাল থেকে একের পর এক হোটেল–রিসর্ট তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে তা তৈরি করেছেন হোটেল মালিকরা।
প্রশাসনিক অভিযান চালিয়ে সৈকত জুড়ে অবৈধ নির্মাণ বন্ধ দূরে থাক, নিয়ন্ত্রণেও আনা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন প্রবীণ পরিবেশকর্মী সোমনাথ দাস অধিকারী।

তিনি বলেন, ‘হোটেল ভাঙার নির্দেশ নাটক ছাড়া কিছু নয়। ২০২২ সালে প্রশাসনকে মন্দারমণির অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। তার পরেও প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বা না নিয়ে হোটেলের সংখ্যা বেড়ে ২৬৫টি হয়েছে। এখন আরও নতুন হোটেল তৈরি হচ্ছে।’
তাঁর প্রশ্ন, ‘কী ভাবে সৈকত জুড়ে হোটেল নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে পঞ্চায়েত ও উন্নয়ন পর্ষদ’। তদন্তের দাবি করেছেন তিনি। মন্দারমণি হোটেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি দেবরাজ দাস বলেন, ‘২০০৭, ২০১১, ২০২২ সালে একই ভাবে হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত ও জেলা প্রশাসন। এ বারও আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাব।’

তাঁর যুক্তি, ‘সিআরজেড এলাকা এখনও চিহ্নিত হয়নি। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বেশিরভাগ হোটেল তৈরি হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে হোটেল ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছে। আবার শুনানিতেও ডাকা হয়েছে। আমাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

Asia News https://asianewslive.in

Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.

You May Also Like

More From Author