আজ রাতে কালীপুজো, তার আগে জেনে নিন আদ্যাশক্তির মাহাত্ম্য

আজ ৩১ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে কালীপুজো। এদিন রাতে হবে দেবী কালীর আরাধনা। কালী আদ্যাশক্তি বা আদিশক্তি নামেও পরিচিত। যুগে যুগে তাঁকে রচিত হয়েছে নানা গল্পকথা। জেনে নিন এই দেবীর মাহাত্ম্য।
কাল ধাতু প্রত্যয় যুক্ত হয় কালী শব্দটি তৈরি হচ্ছে। কাল মানে সময়, যাকে চোখে দেখা যায় না। তাই কালী কালো বা ঘন নীল। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ – এই তিন কাল নিয়ে মহাকাল। আর সেই মহাকালের শক্তি কালী দশমহাবিদ্যা তারই প্রথম রূপ।
অম্বিকা থেকে কালী
সৃষ্টির আদিতে বিষ্ণু তখন যোগনিদ্রায় ছিলেন। বিষ্ণুর নাভিপদ্ম থেকে ব্রহ্মার উত্‍পত্তি হয়। এই সময় বিষ্ণুর কর্ণকমল থেকে দুটি দৈত্য জন্ম নেয়। এই দুই দৈত্যের নাম ছিল মধু ও কৈটভ। এই মধু ও কৈটভ ব্রহ্মাকে আক্রমণ করতে উদ্যত হলে ব্রহ্মা মহাকালীর স্তব শুরু করেন। ভক্তের ডাকে আদ্যাশক্তি মহামায়া থেকে কালীর আবির্ভাব হয়। আবার মার্কন্ডেয় পুরাণে শ্রী শ্রী চন্ডীতে বলছে শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামে দুই দৈত্যের অত্যাচারে দেবতারা ভয়ে ভীত হয়ে নিজেদের বাঁচাতে জগতকে বাঁচাতে আদ্যাশক্তির আরাধনা করেন। তখন আদ্যাশক্তির দেহকোষ থেকে আবির্ভূতা হন অম্বিকা। তিনি কৃষ্ণবর্ণ হওয়ায় তার অপর নাম কালী।
কোথাও তিনি ভদ্রকালী, কোথাও আবার রক্ষাকালী, কোথাও শ্মশানকালী, আবার কোথাও তিনি শকুন্তলা কালী। এছাড়া ভক্তদের ডাকে তিনি ক্ষ্যাপা কালী, নিশি কালী, ডাকাত কালী, সিদ্ধেশ্বরী কালী, করুণাময়ী কালী রূপে আবির্ভূতা হন এবং পূজিতা হন। দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী, কালীঘাটের মা কালী-সহ ভারতবর্ষ ও গোটা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই তিনি দক্ষিণা কালী রূপে পূজিতা হন। কালীমূর্তি দক্ষিণ পদ মহাদেবের বুকে আগে থাকলে তিনি দক্ষিণা কালী। আর কালীমূর্তির বাম চরণ মহাদেবের বুকে আগে থাকলে বামাকালী রূপে পূজিতা হন। বেদান্তের মুণ্ডক উপনিষদ মা কালীর যে পরিচয় পাওয়া যায় সেখানে করালি মা কালীর অগ্নির লকলকে সাতটি জিহ্বা। তিনি হলেন করুণাময়ী, তাঁর কাছে পক্ষপাতিত্ব নেই, যে তাঁকে আকুল হয়ে ডাকবে, তাকেই রক্ষা করতে দেবী আবির্ভূত হবেন। দেবতা, দৈত্য বা মানুষ যিনিই তাঁর শরণ নেবেন, তাঁকেই রক্ষা করবেন মহামায়া। তাঁকে ঘিরে অনেক লোককথাও প্রচলিত।

ষোড়শ শতকের প্রখ্যাত পন্ডিত ও তন্ত্রসাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ মহাশয় মূর্তি রূপে দক্ষিণা কালীর পুজোর প্রচলন করেন। তার আগে তন্ত্রে বা ঘটে পুজো সম্পন্ন হত। তন্ত্র সাধনা ও গুপ্ত বিদ্যা হল গুরুমুখী বিদ্যা, এতে পঞ্চমুখ সাধনার উল্লেখ আছে। এই পঞ্চমকার সাধনার প্রকৃত অর্থ না বুঝে অনেক সাধক বিভিন্ন সময়ে বিপদে পড়ছেন। সাধকের জীবনে মৌনতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।

যারা শনির সাড়ে সাতি, শনির ধাইয়া বা শনির প্রকোপে আছেন তাঁরা কালীর পায়ের সিঁদুর মাখা জবা ফুল, বেলপাতা আর হাটের মাটি নিয়ে একটি তিন ধাতুর কবচে পরুন। অবশ্যই কালী পুজোর দিন উপবাস রাখবেন। অসুস্থ ব্যক্তি হলে নিরামিষ খেয়ে থাকবেন এবং পুজো শেষে প্রসাদ খাবেন।

Asia News https://asianewslive.in

Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours