প্রাচীনতম ভাষা কি এমন একটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়ে, আন্দাজ তিন সাড়ে তিন লক্ষ বৎসর আগে আমাদের এই মানব গণের একটি শাখা হোমো-স্যাপিয়েন্সদের যাত্রা শুরু হয় । কিন্তু সাড়ে তিনলক্ষ বৎসরে তাদেরও বিবর্তন হয়েছে। আন্দাজ দুই লক্ষ বৎসর আগে সেই আদ্যিকালের স্যাপিয়েন্সদের বিবর্তিত রূপে আমরা কাঠামোগত ভাবে আধুনিক স্যাপিয়েন্স। তাই সঠিক ভাবে বলতে গেলে আমাদের বয়স দুই লক্ষ বৎসর। পৃথিবী জোড়া আধুনিক স্যাপিয়েন্সদের মধ্যে নিরন্তর লেগে আছে জাতি বিদ্বেষ, তার সাথে যোগ হয়েছে ভাষাগত বিরোধ, আর অবশ্যই ধর্মীয় বিদ্বেষ। অথচ এই আধুনিক বিশ্বের সবাই আসলেই ভাইবোন। আমরা সবাই, গোটা পৃথিবীর সবাই একই সামান্য কয়েকজন জননীর সন্তান। আমাদের মধ্যে যা কিছু বদল দেখা যায় সেটা ঘটেছে, আর ঘটবেও, তার সবটাই শুধুই জিনের খেয়ালখুশিতে। দুই লক্ষ বৎসর আগে কাঠামোগত আধুনিক মানুষদের প্রায় শুরুতেই তারা দুই ভাগ হয়ে যায়। মাতৃবংশগতি মাইটোকন্ড্রিয়া হ্যাপ্লোগ্রুপ বলে শুরুতেই দুটো গোষ্ঠীর যাত্রা শুরু করেছিল। মাইটোকন্ড্রিয়া-L0, মাইটোকন্ড্রিয়া -L1 , বর্তমান পৃথিবীর সবাই যতই জাতি বিদ্বেষ নিয়ে গর্বিত বা ঘৃণিত হই না কেন, সবাই ঐ মাইটোক্নড্রিয়া-L1 শাখার লোক। বিবর্তনের পথ ধর এসেছে মাইটোক্নড্রিয়া-L1, L2, L3 ইত্যাদি। এদের মধ্যে মাইটোকন্ড্রিয়া-L3 শাখার জনাকয়েক অদম্য সাহসী জননীই হলেন আমাদের সবার জনননী, যাঁরা পরম সাহসে ভর করে স্বদেশ আফ্রিকা ছেড়ে নতুন অজানা বৃহত্তর পৃথিবীতে পাড়ি দিয়েছিলেন। আর মাইটোক্নড্রিয়া-L0 শাখার জননীরা? তাঁরা থেকে গেলেন আফ্রিকাতেই। আলাদা হয়ে। বিচ্ছিন্ন হয়ে। তাঁরা অনেকটা দুরে সরে গেলেন দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকায়। তাঁরা এখনো আছেন। তাঁরা আমাদের অতি পরিচিত আফ্রিকানদের থেকে দেখতে খানিক আলাদা। তাঁরা অনেকেই এখনো তাঁদের অতীতেই বাস করেন। শিকারি-সংগ্রাহক যাযাবর, অর্ধ যাযাবর, পশুপালক। না তাঁরাও আধুনিক কালে অনেক বদলে গেছেন। কিন্তু আমুল বদল হয় নি এখনো। মানব জাতির প্রাচীনতম ভাষা কি ? কারন ভাষা বদলায় ভৌগোলিক পরিবেশ জলবায়ু যখন যেমন জীবনধারাকে বদলে দেয় তারই সাথে মানুষের ভাষাকেও বদলে দেয়। ভাষা বদলায় অন্য ভাষাগোষ্ঠীর সাথে মেলা মেশাতেও। কাজেই প্রাচীনতম ভাষা আজ আর নেই। তবে সেই দুইলক্ষ বৎসর আগের কাঠামোগত পরিবর্তনের আগের মানুষের সাথে আমাদের যে বদল ঘটেছে তারই সাথে ভাষার বদলেরও সম্ভাবনা থাকে।
Asia News
https://asianewslive.in
Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.