এই ভেষজ মিশ্রিত পানীয়ের গুণে, গ্যাস-অ্যাসিডিটির হবে ছুটি
বাঙালি আর গ্যাসের সমস্যা সমার্থক। তাই তো এই রাজ্যের প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে কিছু পান আর না পান, একটা গ্যাসের ওষুধ নিশ্চিতভাবে পেয়ে যাবেন। আর সাধারণ মানুষের এহেন অ্যান্টাসিড প্রীতি দেখেই চোখ কপালে ওঠে বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের কথায়, গ্যাসের সমস্যাকে বাগে আনতে কথায় কথায় ওষুধ খাওয়া কিন্তু একবারেই উচিত নয়। উল্টে এই ভুলটা করলে একাধিক রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাই বাড়বে।
আর এই পরামর্শ শোনার পর আপনার মাথায় প্রশ্ন আসতেই পারে, তাহলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে ঠিক কী ভাবে? তার উত্তরে বলি শুনুন, রোজ সকালে উঠে জিরে জলে চুমুক দিলেই কিন্তু উপকার পাবেন হাতেনাতে। তাই আর সময় নষ্ট না করে পেটের সমস্যাকে বাগে আনার কাজে এই পানীয়ের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন।
হজম ক্ষমতা দুর্বল হলে গ্যাস, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা বাড়বে বৈকি! তাই এইসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সবার প্রথমে হজম ক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর সেই কাজে আপনার হাতের পাঁচ হতে পারে জিরে জল। কারণ এই পানীয়ে রয়েছে থাইমল নামক একটি উপাদান যা কিনা হজমে সাহায্যকারী নানা উৎসেচকের ক্ষরণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যার ফলে দ্রুত হজম হয়ে যায় খাবার। আর খাবার দ্রুত হজম হলে যে অচিরেই কমবে গ্যাসের সমস্যা, তা তো বলাই বাহুল্য। তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা আজ থেকেই এই পানীয়কে ডায়েটে জায়গা করে দিন।
এই পানীয় অন্ত্রের স্বাস্থ্য ফেরানোর কাজে একাই একশ। এমনকী প্রোটিন ফ্যাট সুগারের মত উপাদানকে ভেঙে হজমে সাহায্য করার জন্য এর চুড়ি মেলা ভার। শুধু তাই নয় ডায়রিয়া বমি বমি ভাব এর মত সমস্যা কেও বাগে আনতে এই পানি অসাধারণ কাজ করে। তাই পেটের হাল ভাল করতে চাইলে এই পানীয় কাল সকাল থেকে পান করা শুরু করে দিন।
তবে শুধু পেটের সমস্যা নয় একাধিক উপকার করে এই পানীয়। যেমন ধরুন-
মেদের বহর বাড়লেই চিত্তির। সেক্ষেত্রে পিছু নিতে পারে ডায়াবিটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরল থেকে শুরু করে একাধিক জটিল অসুখ। তাই যত দ্রুত সম্ভব ওজন কমানোর কাজে নেমে পড়তে হবে। আর এই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে নিয়মিত জিরে জলে চুমুক দিতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই পানীয়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা বিপাকের হার বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। আর বিপাকের হার বাড়লে যে অচিরেই ওজন কমবে, তা তো সহজেই অনুমেয়! তাই আর সময় নষ্ট না করে আজ থেকেই আপনার ওয়েট লস ডায়েটে এই পানীয়কে জায়গা করে দিন।
ভারতে আনকন্ট্রোলড ডায়াবিটিস রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। আর সেই কারণেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, নিউরোপ্যাথি থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে ডায়াবিটিসকে বশে আনতেই হবে। আর সেই কাজে আপনার হাতিয়ার হতে পারে জিরে জল। কারণ এই পানীয়ে উপস্থিত কিছু উপাদান ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ানোর ক্ষমতা রাখে, যার ফলে কমে ব্লাড সুগার। তাই ডায়াবিটিস রোগীদের ডায়েটে এই পানীয় থাকা মাস্ট।
জিরে জল খেলে কমে ব্লাড প্রেশার। এমনকী কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডস লেভেলকে বশে আনার কাজেও এই পানীয়ের জুড়ি মেলা ভার। আর হৃদরোগের এই তিন মূল আসামীকে কন্ট্রোলে রাখতে পারলে যে অচিরেই হার্টের হাল ফিরবে, তা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সেই কারণেই বিশেষজ্ঞরা সকলকে নিয়মিত জিরে জল পান করার পরামর্শ দেন। আশা করছি, এই নিয়মটা মেনে চললেই আপনারা সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে পারবেন।