কালীগঞ্জের মীরা বাজার পুলিশ ফাঁড়ির বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ
নদীয়ার কালীগঞ্জ থানার মীরা বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইবাদুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে গুরুতর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে এই অভিযোগটি কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে জানানো হয়েছে। অভিযোগকারী ব্যক্তি শেখ মহম্মদ মাইনুল ইসলাম, যিনি কালীগঞ্জের ভুরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা, দাবি করেছেন যে তাকে ২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে পুলিশ মারধর করেছে।
মাইনুল ইসলামের অভিযোগ, তিনি যখন মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন, তখন মীরা বাজারের বুলেট হোটেলের কাছে পুলিশ লরি চালকদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায় করতে দেখেন। তিনি সন্দেহ করেন যে পুলিশ তাকে মোবাইল দিয়ে এই ঘটনা রেকর্ড করতে দেখে, কিন্তু মোবাইল তল্লাশি করেও কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। এরপর, এক পুলিশ আধিকারিক তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে, মাইনুল ইসলামকে মীরা বাজার ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে আরও মারধর করা হয়। অভিযোগ অনুসারে, ফাঁড়ির ইনচার্জ ইবাদুর রহমান এবং অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা মাইনুলের কানে লাথি মারেন এবং তাকে গুরুতরভাবে শারীরিক নির্যাতন করেন।
মাইনুল ইসলাম চিকিৎসার জন্য স্থানীয় মীরা পি.এইচ.সি-তে যান, তবে চিকিৎসকরা তার অবস্থাকে গুরুত্ব দেননি এবং তাকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়নি। বাড়ি ফিরে তিনি কানে রক্তপাত এবং শ্রবণশক্তির ক্ষতি অনুভব করেন। পরে, তাকে বহরমপুর নিবেদিতা নার্সিংহোমে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা জানান যে, তার দুই কান ৭৫% ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মাইনুল ইসলাম স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানালেও, তার দাবি, থানার পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং তাকে ও তার পরিবারকে ভীতির মুখে পড়তে হয়েছে। এলাকার লোকজন এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এবং অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি করেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন দায়িত্বশীল অফিসার কীভাবে এমন বর্বর আচরণ করতে পারেন, এবং তাকে যদি উচ্চ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য কী ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
অন্যদিকে, মীরা ফাঁড়ির ইনচার্জ ইবাদুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, মাইনুল ইসলামের ওপর কোনো মারধর করা হয়নি। তিনি জানান, মাইনুল ইসলামের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তবে সে তা লিখিতভাবে জানাতে পারে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, মাইনুলের মেডিকেল রিপোর্টে মারধরের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
এখনও পর্যন্ত প্রশাসন থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, তবে সাধারণ মানুষের আশা, পুলিশ সুপার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করবেন এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিকে ন্যায়বিচার দেবেন। পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা হ্রাস করছে, তাই প্রশাসনের জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
+ There are no comments
Add yours