প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তল ঘোষের জামিন মঞ্জুর কলকাতা হাইকোর্টের
ইডির মামলায় 10 লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে কুন্তল ঘোষের জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট । তবে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে জানিয়েছেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। একইসঙ্গে বিচারপতির নির্দেশ, কুন্তল কোনওভাবে মামলা চলকালীন তথ্যপ্রামাণ বিকৃত করতে পারবেন না এবং নিম্ন আদালতে নিয়মিতভাবে হাজিরা দিতে হবে ৷তবে কুন্তলের এখনই জেলমুক্তি হচ্ছে না ৷ কারণ সিবিআইয়ের দায়ের করা অন্য একটি মামলায় তাঁর জামিন এখনও মঞ্জুর হয়নি। এর আগে কুন্তল ঘোষের জামিনের মামলার শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টে ইডি জানায়, কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতারের পর তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় 1 কোটি 30 লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । ইডির বক্তব্য, তাঁকে গ্রেফতারের পরই সেই টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল । কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের আরও দাবি, প্রায় 325 জনের কাছে থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে 3 কোটি টাকা নিয়েছিলেন কুন্তল ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে জেরা করে এই তথ্য তারা পেয়েছেন বলে জানান ইডি-র আধিকারিকরা ৷
এখানেই শেষ নয় ৷ প্রায় 19 কোটি টাকা ঘুরপথে কুন্তলের অ্যাকাউন্টে যায় বলে দাবি ইডি-র ৷ এই মুহূর্তে এই সমস্ত বিষয়গুলির উপর তদন্ত চলছে ৷ তাই কুন্তলের জামিন এখন যাতে মঞ্জুর না-করার আবেদন করে ইডি ৷ এরপর জামিন মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ রায় ঘোষণা স্থগিত রাখেন ৷পাল্টা কুন্তলের আইনজীবীর দাবি ছিল, যে ভাবে তদন্তের নামে কুন্তলকে আটকে রাখা হয়েছে, তা আইনতভাবে অবৈধ নয় । তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ নেই । ইডি-র আধিকারিকরা যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে, তা 2009 সালের । সেই সব সম্পত্তির বৈধ নথিপত্রও রয়েছে । এর সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগ নেই ।সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, 2023 সালের 21 জানুয়ারি কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতারের পর তদন্তে কিছু পাননি ইডি-র কর্তারা ৷ এরপর তিনি
সংবিধানের 21 ধারায় ন্যাচারাল জাস্টিসের উল্লেখ করে বলেন, “কোনও প্রমাণ দেখাতে না-পারলে জামিন মঞ্জুর করা উচিত । যে ভাবে তাঁকে হেফাজতে রাখা হয়েছে তা বৈধ নয় ।” পাল্টা ইডি-র আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, “মোট 1 কোটি 30 লক্ষ টাকা গ্রেফতারের পর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । সুপ্রিম কোর্ট যতই ন্যাচারাল জাস্টিসের কথা বলুক, প্রত্যেকটা মামলা তার মেরিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করা প্রয়োজন । সব মামলা একই নয় । অন্যদিকে, কুন্তলের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 479(2) ধারায় একাধিক অভিযোগের তদন্ত চলছে । এই পরিস্থিতিতে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা উচিত নয় ।