মেয়ের বিয়ে প্রতিবেশী যুবকের সঙ্গে দিতে রাজি হননি বাবা, কুপিয়ে খুন সবজি ব্যবসায়ীকে
মেয়ে পাড়ার যুবকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে নারাজ। তাই মেয়েটির বাবা পাড়ার যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। আর এই স্পষ্ট কথায় যে এত কষ্ট ভোগ করতে হবে তা ভাবেননি তিনি। মেয়ের বিয়ে দিতে অস্বীকার করার জেরে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল। বসিরহাটের মাটিয়া থানার কোড়াপাড়া এলাকায় তা নিয়ে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। মেয়ের বাবাকে ধারাল অস্ত্রের কোপে খুন করা হল বলে অভিযোগ। একের পর এক কোপ মারার ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল ওই বৃদ্ধের। তাই অভিযুক্ত নাজিমুদ্দিনের বাড়ি ভাঙচুর করল স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে মেয়েটির বাবা সবজি ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁকে খুন করার পর তাঁর কাছে থাকা টাকা এবং গয়না নিয়ে চম্পট দেয় যুবক নাজিমুদ্দিন বলে অভিযোগ। বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার কোড়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা জব্বর মোল্লা (৫৫)। তিনি পেশায় সবজি ব্যবসায়ী। সম্প্রতি প্রতিবেশী যুবক নিজামউদ্দিন মোল্লা তাঁর মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু মেয়ে রাজি না হওয়ায় বাবা বিয়ে দিতে রাজি হননি। সেটা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বচসা হয়েছিল। জব্বরকে তাই খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই অশান্তির আবহের মধ্যেই অন্যত্র মেয়ের বিয়ে দেন সবজি ব্যবসায়ী। তাতেই রেগে গিয়ে হিংসার পথ বেছে নেয় নিজাম।
অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে সবজির পাইকারি ব্যবসায়ী জব্বার মোল্লা ব্যবসার কাজ সেরে ট্রেনে থেকে মালতিপুর স্টেশনে নামেন। কোড়াপাড়ায় তাঁর বাড়ি ফিরছিলেন। তখন ট্রেন লাইনের ধারে তাঁকে ধরে দেদার কোপাতে থাকে যুবক নাজিমুদ্দিন মোল্লা। ওই আঘাতের চোটে চিৎকার করতে থাকেন জব্বার মোল্লা। তাতে এলাকার মানুষ ছুটে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নাজিমুদ্দিন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। জব্বার মোল্লাকে তখন স্থানীয় বাসিন্দারা সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে খুনের পর জব্বারের সোনার চেন ও সঙ্গে থাকা নগদ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় নিজাম বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। আর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
ওদিকে জব্বারের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীরা নাজিমুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তবে সেখানে অভিযুক্তের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।এছাড়া এই খুনের ঘটনায় এখন ফুঁসছে এলাকার বাসিন্দারা।
নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিল নাজিমুদ্দিন। কিন্তু আমরা রাজি ছিলাম না। তার জন্য ও আমার স্বামীকে কুপিয়ে মেরে ফেলল। ওর সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা, ফোন সব নিয়ে পালিয়েছে। আমি ওর কড়া শাস্তি চাই।’ এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে বসিরহাট থানার পুলিশ। এই এলাকার বাসিন্দাদের বয়ান নেওয়া হচ্ছে। খুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা হচ্ছে।