যোগাসনেই মিটবে সব রোগভোগ! হার্ট ভাল রাখতে যোগা করার সেরা সময় কখন?
মডার্ন লাইফ মানেই অসংযমী জীবনযাত্রা। তার সঙ্গে যুক্ত হয় উদ্বেগ ও বিভিন্ন মানসিক চাপ। জটিল জীবনের আবর্তে পড়ে শরীরের প্রতি আর খেয়াল করার সময় থাকে না কারও। তাই যৌবনেই বহু মানুষ আক্রান্ত হন বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায়। বিশেষ করে আজকাল অল্পবয়সেই হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে বহু ব্যক্তিকে। অথচ সারাদিনে কিছুটা সময় বের করে শরীরচর্চা করলে প্রতিরোধ করা যায় যে কোনও ধরনের হৃদরোগ।একাধিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হার্টের অসুখ দূরে রাখতে জুড়ি নেই যোগার! শরীর ও মনের ক্ষমতা বাড়ায় যোগা। বাড়ে সহ্যশক্তি, ধৈর্য, ভারসাম্য ও একাগ্রতা। এমনকী বরিষ্ঠ কার্ডিওলজিস্টরাও বলছেন, যোগা করলে তা নানা পথে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। প্রশ্ন হল কীভাবে? দেখা যাক—
উদ্বেগ কমায়:
দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগে ভুগলে শরীরে বেশ কিছু হর্মোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে কর্টিজল ও অ্যাড্রেনালিন হর্মোনের কথা অবশ্যই উল্লেখ করা দরকার। এই ধরনের হর্মোনের বাড়বাড়ন্তে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। বৃদ্ধি পায় হার্ট রেট। দেখা গিয়েছে একটানা উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে করোনারি আর্টারি ডিজিজ-এ ভোগার আশঙ্কাও। সব মিলিয়ে হতে পারে হার্টের ছন্দপতনজনিত সমস্যা, ইস্কিমিয়া ইত্যাদি। এককথায় হার্টের সুস্বাস্থ্যের পরিপন্থী স্ট্রেস। তাই উদ্বেগ কমাতে চাইলে হালকা এক্সারসাইজের সঙ্গ ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা জরুরি। উদ্বেগ কমলে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়!
সুগার, কোলেস্টেরল, অতিরিক্ত ওজন:*
নিয়মিত যোগা করলে ওজন বাড়ে না। এমনকী রক্তে কোলেস্টেরল ও সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসে। মনে রাখতে হবে, বিষয়গুলি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত কিছু মধ্যবয়সিদের মধ্যে করা এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা ৩ মাস নিয়মিত যোগাসন করেছেন তাঁদের ওজন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এছাড়া রক্তে কোলেস্টেরল, সুগারের মাত্রাও হ্রাস পেয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে এই ধরনের মানুষদের হার্টের রোগের ঝুঁকিও কমেছে অনেকখানি।
শরীরচর্চা:
যোগাসনের মতো এক্সারসাইজ অনেকখানি ক্যালোরি বার্ন করে। একইসঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধির কমনীয়তাও বাড়িয়ে তোলে। বৃদ্ধি পায় পেশির জোর। যোগার সঙ্গে অ্যারোবিক এক্সারসাইজ যেমন সাঁতার অথবা দৌড়াদৌড়ির অভ্যেসও শারীরিকভাবেও একজন ব্যক্তিকে করে তোলে ফিট।
যোগা এবং ধূমপান:
ধূমপান করেন না এমন ব্যক্তির তুলনায় ধূমপানে আসক্ত ব্যক্তির হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যোগাসনের নেশা হলে ধূমপানে আসক্তি দূর হয়। সাধারণত উদ্বেগ কমাতে অনেকেই ধূমপানের আশ্রয় নেন। এমন ব্যক্তিরা যোগাসন শুরু করলে অচিরেই বুঝতে পারেন, দুশ্চিন্তার সঙ্গে লড়া সহজ হয়ে যাচ্ছে। ফলে তাঁরা সহজেই ধূমপান ছাড়তে পারেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, ধূমপান কিন্তু হার্টের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি:
হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিরাও সহজ কিছু যোগাসন করতে পারেন। দেখা গিয়েছে হদরোগীরাও যোগাসন অভ্যেসের পর শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক তরতাজা বোধ করছেন।
কতক্ষণ যোগা? কখন যোগা?
সকালে খালি পেটে বা হালকা কিছু খাওয়ার আধঘণ্টা পরে নিয়মিত ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট যোগা করুন