রাতে ভাত খেলে শরীরের লাভ হয় না ক্ষতি? জানালেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ

বাঙালি ভাত অন্ত প্রাণ জাতি। তাই আমাদের মধ্যে অনেকেই রাতের বেলায় ভাত খেয়ে ঘুমাতে যান। নইলে তাঁদের দু’চোখে ঘুম আসে না। তবে মুশকিল হলো, আজকাল বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ আবার বাঙালির রাতে ভাত খাওয়ার অভ্যাসকে চ্যালেঞ্জ করছেন। তাঁদের মতে, রাতের বেলায় ভাত খেলে নাকি শরীরের পিছু নিতে পারে একাধিক সমস্যা। তাই অনেকেই তাঁদের কথা শুনে রাতের বেলায় এই খাবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করছেন।
তবে প্রশ্ন হলো, এই কথার পিছনে কি সত্যিই কোনও যুক্তি রয়েছে? নাকি গোটা বিষয়টাই মিথ? সেই বিষয়েই নিজের মতামত দিলেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদার। তাই রাতে ভাত খাওয়া ছাড়ার আগে অবশ্যই একবার এই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জেনে নিন। তারপরই না হয় কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন।

সারাদিন ঠিকঠাক কাজ করে চলার জন্য আমাদের শরীরের শক্তির প্রয়োজন হয়। আর ভাতের মধ্যে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে শক্তির ঘাটতি দূর করে দেয়। যার ফলে এনার্জেটিক জীবন কাটানো যায়। শুধু তাই নয়, এতে রয়েছে আয়রন, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম থেকে শুরু করে একাধিক জরুরি ভিটামিন ও খনিজ। তাই নিয়মিত ভাত খেলে দেহে পুষ্টির ঘাটতি কিছুটা দূর করা যায়।

রাতে ভাত খাওয়া উচিত?

এই প্রশ্নের উত্তরে মীনাক্ষী মজুমদার বলেন, ‘রাতে নিশ্চিত ভাবে ভাত খাওয়া যায়। তাতে অসুবিধার কিছুই নেই। বরং রাতে ভাত খেলে পেটের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কমে। কারণ, ভাত একটি সহজপাচ্য খাবার। এর পাশাপাশি ভাত খেলে ঘুমটাও ঠিকঠাক হয়। তাই যাঁরা রাতে এই কার্ব রিচ খাবার খেতে চান, তাঁরা অনায়াসে খেতে পারেন। এই নিয়ে অহেতুক ভয় পাবেন না।’
একজন সুস্থ মানুষ যাঁর উচ্চতা মোটামুটি ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির মতো, তিনি দিনে ১৫০ গ্রাম চালের ভাত খেতেই পারেন। এক্ষেত্রে একবেলা ৭৫ গ্রাম চালের ভাত এবং অপর বেলা আবার ৭৫ গ্রাম চালের ভাত খান। তাতেই শরীর থাকবে সুস্থ। তবে আবারও বলব, উচ্চতা এবং ওজন অনুযায়ী শরীরে ক্যালোরির চাহিদা হয় ভিন্ন। তাই একজন মানুষ কতটা ভাত খাবেন, তা ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়ার পরই ঠিক করা উচিত।

ডায়াবিটিসে খাওয়া যায়?

হাই ব্লাড সুগারে আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই ভাত খেতে চান না। বিশেষত, রাতে ভাত খেতে তাঁরা ভয় পান। তাতে নাকি সুগার বাড়তে পারে। যদিও ভালো খবর হলো, আপনি যদি নিয়মিত ভাত খান, তা হলেও সমস্যার কিছু নেই। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁর বলে দেওয়া পরিমাপ মতো ভাত খেতে হবে। তাতেই ডায়াবিটিসকে বাগে আনতে পারবেন।

রুটি কি বেশি উপকারী?

ভাতের এবং রুটির ক্যালোরি ভ্যালু এক। তবে রুটিতে ভাতের তুলনায় বেশি ফাইবার রয়েছে। তাই রুটি খেলে সুগার কম বাড়ে। দ্রুত পেট পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে রুটি অনেকেরই সহ্য হয় না। তাঁদের এই খাবার খেলে পেটের সমস্যা হয়। তাই রুটি এবং ভাতের মধ্যে অহেতুক তুলনা করে লাভ নেই। বরং যাঁর যেই খাবারটি পছন্দ তিনি সেটাই খান। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।

Asia News https://asianewslive.in

Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.

You May Also Like

More From Author