সন্তান’ ছবির প্রতিক্রিয়া: অভিভাবক-সন্তান সম্পর্কের সংকট ও আবেগের ঘূর্ণি

রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘সন্তান’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে, এবং বিশেষ স্ক্রিনিংয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া এসেছে। ছবির গল্প সহজ হলেও, এটি গভীরভাবে আমাদের অভিভাবক-সন্তান সম্পর্কের সংকট ও আবেগের জটিলতার দিকে নির্দেশ করে। প্রাথমিকভাবে ছবির আবেগঘন উপস্থাপনা অনেকের কাছে একটু অতিরিক্ত মনে হতে পারে, তবে বাস্তবের সঙ্গে তার সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। গল্পে দেখা যায়, মিঠুন চক্রবর্তী ও অনসূয়া মজুমদারের চরিত্ররা, যাদের সন্তান ঋত্বিক চক্রবর্তী, তার সঙ্গে আবেগের যোগসূত্র তৈরি করতে ব্যর্থ হন। ছবির মূল বিষয় হল, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের মানসিক দূরত্ব এবং সেই সম্পর্কের বিচ্ছিন্নতা, যা একসময় অপরাধবোধ ও আবেগের জটিলতায় রূপ নেয়। এই দৃশ্যগুলো দেখতে গিয়ে দর্শক নিজেদের জীবনের কিছু বাস্তবতা বুঝতে বাধ্য হন।ছবির স্নেহময় অভিভাবকদের প্রতি সন্তানের দূরত্ব এবং এর ফলে সৃষ্ট মানসিক সংকটগুলোকেই রাজ চক্রবর্তী সন্নিবেশিত করেছেন। আধুনিক সময়ে এই ধরনের সম্পর্কের ক্রাইসিস সাধারণ, যেখানে সন্তানের কাছে পরিবারের সদস্যরা হয়ে ওঠেন কেবল দায়িত্বপূর্ণ, কিন্তু আবেগপূর্ণ সম্পর্কের দৃষ্টিকোণ থেকে তেমন কিছু থাকে না। বিশেষভাবে, ছবিতে “পেরেন্টিং” বা পিতামাতার দায়িত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে মায়ের অন্ধ স্নেহের বিরুদ্ধে ছেলে নিজেকে সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারছে না। ছবির শেষে, পিতা-পুত্রের সম্পর্কের পুনর্নির্মাণ, সেই “সরি” বলার মুহূর্ত, একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়: সম্পর্কের ভিতরে কেবল দেওয়া-নেওয়ার প্রবণতা থাকলে তা সত্যিকার আবেগের ভিত্তিতে স্থায়ী হতে পারে না।ছবির মাধ্যমে রাজ চক্রবর্তী একটি সামাজিক মন্তব্য করেছেন যে, সঠিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য যথাযথ সীমারেখা, সম্মান, এবং খোলামেলা আলোচনা অত্যন্ত জরুরি। ‘সন্তান’ ছবিটি নিজের জীবনের গভীরতায় প্রবেশ করে এবং এমন একটি প্রশ্নের মুখোমুখি করে যা প্রত্যেক দর্শককেই ভাবতে বাধ্য করবে: কীভাবে আমরা আমাদের সম্পর্কের মধ্যে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসা এবং বোঝাপড়া তৈরি করতে পারি?

Asia News https://asianewslive.in

Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours