হেমন্তের দোড়গোড়ায় বিক্ষিপ্ত বর্ষার এই মারাত্মক আর্দ্র আবহাওয়ায় এখন ঘরে ঘরে নানা ভাইরাল সংক্রমণ। কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
সকলের যে জ্বর হচ্ছে তা নয়। তবে জ্বর-জ্বর ভাব, গা-হাত-পা ব্যথা আর গলা খুসখুস নিয়ে কাহিল হয়ে পড়ছেন বিরাট অংশের শহরবাসী। হেমন্তের দোড়গোড়ায় বিক্ষিপ্ত বর্ষার এই মারাত্মক আর্দ্র আবহাওয়ায় নানা ভাইরাল সংক্রমণ এখন ঘরে ঘরে। যা একজনকে ঘায়েল করেই নিস্তার দিচ্ছে না, ছড়িয়ে পড়ছে পরিবারের অন্য একাধিক সদস্যের মধ্যেও। মোটামুটি সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও বুকে বসে যাওয়া সর্দি আর ভয়াবহ দুর্বলতা যেন পিছু ছাড়তেই চাইছে না।এমন উপসর্গ এখন ছেয়ে গিয়েছে কলকাতা থেকে জেলা, সর্বত্র। অধিকাংশেরই হয়তো জ্বর নেই। কিন্তু ডেঙ্গির মরশুমে জ্বর-জ্বর ভাব, গলা ব্যথা এবং গা-হাত-পায়ে যন্ত্রণাটা এতটাই অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে যে তা রীতিমতো প্রভাব ফেলছে রোজনামচায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ২৫-৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা আর ৬০-৯৫% আপেক্ষিক আর্দ্রতা ভাইরাসকুলের বাড়বৃদ্ধির জন্য আদর্শ বলেই এহেন উপসর্গে জেরবার মানুষ এখন ঘরে ঘরে। উপসর্গ অবশ্য নিজে থেকেই ক’ দিনে সেরে যাচ্ছে। যদিও চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন, এর মধ্যেই মিশে রয়েছে কিছু ডেঙ্গির সংক্রমণও। তাই তথাকথিত ঠান্ডা লাগাকে লঘু করে দেখতে নিষেধ করছেন তাঁরা। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ রোহিত কাপুরের পরামর্শ, ‘স্কুল খুলেছে সোমবার থেকে। এই অবস্থায় ছোটদের মধ্যে জ্বরের প্রকোপ বাড়বে। তাই শরীর খারাপ থাকলে সন্তানকে স্কুলে না পাঠানোই ভালো। তাতে অন্য সহপাঠীদের ঝুঁকি কমে অনেকটা।মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস সতর্ক করছেন, ‘জ্বর না থাকলে চিন্তার কিছুই নেই। এমনিই দিন তিনেকের মধ্য সেরে যাচ্ছে। কিন্তু যদি সামান্য কাঁপুনিও থাকে এবং জ্বর ছাড়তে বেশি সময় লাগে, তা হলে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া ও ম্যালেরিয়া টেস্ট করা দরকার।’ তাঁর পরামর্শ, জনসমাগমে মাস্ক ব্যবহারে লাভ মেলে। কেননা, ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি অ্যাডিনো কিংবা নোরোর মতো অন্যান্য রেসপিরেটরি ভাইরাসের সংক্রমণেও তাতে লাগাম পড়ে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়ের মতে, ‘ঠান্ডা-গরমের কারণে যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাময়িক ঝিমিয়ে পড়ে, ইমিউনিটির ফাঁক গলে ঠিক তখনই হামলা চালায় ভাইরাস। খুব ঠান্ডা জল খাওয়া এবং বারংবার এসি-তে ঢোকা-বেরোনো সেই সুযোগকে আরও প্রসারিত করে।