আজ রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে খেতে খাওয়া মানুষের বঞ্চনার কথা নিয়ে গর্জন করে উঠলেন তৃণামুল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন, ইনডোর স্টেডিয়াম, শ্যামবাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে বড় বড় মিছিল এসেছে এদিন। এক কথায় আজ ব্রিগেডে জনজোয়ার।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ তুলে এদিন অভিষেক বলেন, ‘আজকের ব্রিগেড সমাবেশ তৃণমূলের সমাবেশ নয়, ৫৯ লক্ষ শ্রমিক যাদের টাকা আটকে রাখা হয়েছিল তাদের সমাবেশ, গরিব খেটে খাওয়া মানুষের ব্রিগেড। ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার প্রকৃত প্রাপক যাদের মাথার ওপর ছাদ প্রয়োজন। আজ তাঁদের ব্রিগেড। বাংলার আপামর জনসাধারণের ব্রিগেড, তফশিলি জাতি-উপজাতির ব্রিগেড। তৃণমূল কথা দিয়ে কথা রাখে। নবজোয়ারের সময় বলেছিলাম, আপনি ১০০ দিনের টাকাকে সামনে রেখে ভোট দিন, টাকা আপনারা পাবেন। মানুষ ভোট দিয়েছেন। ৬ মাসের মধ্যে ১০০ দিনের টাকার ব্যবস্থা আমরা করেছি। আজ যে কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করতে চলেছি, তার নাম জনগণের গর্জন, বাংলা বিরোধীদের বিসর্জন। এককথার ছেলে আমি। দিদি কথা দিয়ে কথা রাখেন। তৃণমূল কথা দিয়ে কথা রাখেন। গ্যারান্টি দেয়, যেটা ওয়্যারেন্টির জিরো (মোদী কী গ্যারান্টি, জিরো ওয়্যারেন্টি)। আগে চোরেরা চুরি করে জেলে যেত, এখন বিজেপিতে যায়।
বিজেপিকে নিশানা করে এদিন অভিষেক বলেন, ‘অনেকে অনেক রকম কথা বলছিল। কেউ বলছিল তৃণমূল দল একে একে ছেড়ে চলে যাচ্ছে… দলটাই থাকবে না। কেউ বলছিল সাফ হয়ে যাবে, কেউ বলছিল ধুয়ে মুছে যাবে। বিগত ১৫-২০ দিনে বহিরাগত নেতারা অনেক বক্তৃতা দিয়েছেন বাংলার মাটি থেকে। এদের কাছে টাকা আছ, ইডি আছে, সিবিআই আছে। আর তৃণমূলের কাছে মানুষ আছে। একটা লড়াই হোক রাষ্ট্রশক্তির কাছে মানুষ জেতে কি না দেখা হোক। যাঁরা বাঙালিকে বাংলাদেশি বলেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? যাঁরা বাঙালিকে বাংলাদেশি বলেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? যাঁরা সংখ্যালঘু মানুষদের পাকিস্তানি বলেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? যাঁরা শিখদের খলিস্তানি বলেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি যাঁরা ভাঙেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? স্বামী বিবেকানন্দকে যাঁরা অপমান করেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? যাঁরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান জানেন না, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? যাঁরা ১০০ দিনের কাজে টাকা বন্ধ করেছেন, তাঁরা বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? বিজেপি বাংলা বিরোধী কিনা বলুন? দিল্লিতে ভূমিকম্প চাই।’
বিচারপতি প্রসঙ্গে তুলে অভিষেক বলেন, ‘আমি বিচারপতি নিয়ে কিচ্ছু বলব না। শুধু বলব আগে আমাদের দেশে কেউ চুরি করলে বা খুন করে বিচারপতিরা তাঁদের জেলে পাঠাতেন। আজ মোদীজির ভারতে চোরেরা, খুনিরা বিচারপতিদের উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জবাব দিন।’
অভিষেক এদিন বলেন, ‘বিবেকানন্দ না থাকলে, বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে গিয়ে বাংলার মাথা উঁচু করার মতো সন্ন্যাসীকে ভারত পেত না। নেতাজি না থাকলে আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করে ব্রিটিশদের নাড়িয়ে দিতেন না কেউ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর না থাকলে নিজের নামটাও বাংলায় লিখতে পারতেন না। রাম মোহন রায় না থাকলে সতীদাহ প্রথা কোনও দিন বন্ধ হত না। মমতা না থাকলে আজও বাংলার কোটি কোটি মানুষকে, বিশেষত জঙ্গলমহলের অত্যাচারিত মানুষকে সিপিএম আর মাওবাদীদের বন্দুকের নলের কাছে মাথা নত করে বাঁচতে হত।’