বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন কিন্তু বাঙালির কাছে এই জামাইষষ্ঠীর একটি গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু কেন পালন করা হয় এই জামাইষষ্ঠী?
যদিও আমাদের বারো মাসের তেরো পার্বনএর তালিকায় সেখানে জামাইষষ্ঠীর কোনো ভাবেই উল্লেখ নেই তবুও একটি বিশেষ দিন বাংলার ঘরে ঘরে। ষষ্ঠী প্রথা প্রচলন হয় সপ্তদশ শতকে কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে তা প্রচলিত হয় আমাদের সমাজে। তখনকার দিনে জামাইরা অনেক বেশি খাতির যত্ন পেতেন কারণ সামাজিক প্রথাছিল বাল্য বিবাহের প্রচলন ছিল সেই সময়। সেকালের মেয়েরা বিয়ের পর বাবার বাড়ি আসার সুযোগ পেতেন না, আর এই জামাইষষ্ঠীই ছিল মেয়েকে কাছে পাবার একটা বিশেষ দিন। এমনকি পুরুষদের বহু বিবাহের প্রচলন ছিল। তাই মেয়ের মা ছিলেন সমাজের একপেশে বস্তু। জামাইদের কদর ছিল সেকালের মেয়েরা ঘরের বাইরে যেতেন না। এই ধরাটা কিছুটা পরিবর্তন হয় কিন্তু উনিশ শতকের গোড়ায় তৎকালীন কলকাতার জামাই ষষ্ঠী ছিল সেকালের বাবু কালচারাল এর মতো।ধনি পরিবার গুলোতেই শুধু সারম্বরে পালন করা হতো এই জামাইষষ্ঠী প্রথা। বাঙালীর তেরো পার্বনের আরেক অঙ্গ হোয়ে উঠলো এই প্রথা।সেকালের জামাইদের নিয়ে লেখালেখি হয়েছে পত্র পত্রিকায় তৎকালীন ছেলেরা জামাই হবার পর মিহি সুতোয় বোনা ধুতি পরে হাতে ধুতির ফুলটি বেঁধে কাঁধে বেনারসি উড়ানি নিয়ে মাথায় সিঁথি কেটে শশুরবাড়ি যেতেন। গলায় বিলিতি চেন হাতে ছড়ি নিয়ে যেতেন জামাইরা। সেকালের শালীদের রসিকতা ছিল জামাইদের নিয়ে, আজকের জলভরা সন্দেশটির জন্ম তখনকার জামাইদের কথাই ভেবে। উনিশ শতকের জামাই ষষ্ঠীর পার্বনকে আজকে ভুঁড়ি ভোজের পার্বন করে তুলেছে।
জামি মানে প্রতিব্রতা স্ত্রী যা কুলবধূ কেও বোঝায়, আসলে কথা “জাময়ষষ্ঠী”প্রত্যেক মাসে দেবী ষষ্ঠীর ব্রত আরাধনা করা হতো। অরণ্যদেবীর ব্রত ছিল ষষ্ঠীর ব্রত। দেবী ষষ্ঠী ছিল সন্তানরক্ষার দেবী। তৎকালীন সময় থেকেই প্রচলিত জামাইষষ্ঠী।
Asia News
https://asianewslive.in
Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.