আরজি কর-কাণ্ডের জেরে বাংলায় জারি হতে চলেছে রাষ্ট্রপতি শাসন? বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস? এমনটাই দাবি করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’তেই এই দাবি করা হয়েছে। যে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন চায় ,এই নিয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দেন রাজ্যপাল। সেই চিঠি ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবনেও পৌঁছে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, আরজি করের চিকিত্সক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় উত্তাল সারা রাজ্য। আরজি কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে সোচ্চার রাজ্যবাসী। প্রতিদিন প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়ছে তিলোত্তমার রাজপথে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ঘটনার গুরুত্ব বিচারে আরজি কর-কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আরজি কর-কাণ্ডে আজই ছিল সুপ্রিম শুনানি।
যেখানে দেশের শীর্ষ আদালত আরজি করের ঘটনাকে ‘ভয়ংকর ও ন্যক্কারজনক’ বলে মন্তব্য করেছে। আরজি করের চিকিত্সক-পড়ুয়ার মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে রাজ্য। এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন কপিল সিব্বল। কেন্দ্রের পক্ষে এসজি তুষার মেহতা। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন,”আরজি করের ভয়ংকর ও ন্যক্কারজনক। এই ঘটনার পর এই দেশে তরুণ, তরুণী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য। সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে। তা সত্ত্বেও মহিলারা কাজের জায়গায় সুরক্ষিত হবেন না কেন? দুঃখজনক ঘটনা হল নির্যাতিতার পরিচয়, ছবি, ভিডিয়ো প্রচার করা হয়েছে। কেন আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হল? নির্যাতিতার পরিবারকে ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়েছে! সন্ধ্যা পর্যন্ত এফআইআর করা হল না! রাত সাড়ে ৮টায় বডি পরিবারের হাতে দেওয়া হল আর এফআইআর রুজু হল ১১টা৪৫- এ? অত্যন্ত সিরিয়াস ব্যাপার। প্রিন্সিপাল পদত্যাগ করার পর সঙ্গে সঙ্গেই অন্য হাসপাতালের প্রিন্সিপাল করা হল! হাসপাতালের প্রিন্সিপালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত। হাসপাতালে যেভাবে ভাঙচুর করা হল, তা মেনে নেওয়া যায় না।”
এই ঘটনায় মঙ্গলবারের মধ্যে সিবিআই-এর কাছ থেকে স্টেটাস রিপোর্ট চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স গঠন করারও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সারা দেশের হাসপাতাল গুলিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কী কী করণীয় তার পরামর্শ দেবে টাস্ক ফোর্স। এদিন আদালত নির্দেশ দেয় যে, শান্তিপূর্ণভাবে যারা প্রতিবাদ দেখাবেন তাদের উপর কোনওভাবে জোর খাটানো যাবে না। ডাক্তার হোক, আইনজীবী হোক বা নাগরিক সমাজ হোক, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ তারা দেখাতে পারেন।