আন্দোলনের নামে টাকা তুলছে কোনো চক্র?
আর জি কর ঘটনায় শহরজুড়ে ‘আন্দোলন’ চলছেই। সকাল-বিকেল-রাত, গলি থেকে রাজপথ আন্দোলনে জেরবার শহর।
তার মধ্যে ক’টা স্বতঃস্ফূর্ত, আর ক’টা নানাবিধ কারণে আয়োজিত, চর্চার বিষয়বস্তু এখন সেটাই। বাস-অটোতে বসে সুসজ্জিত ফ্লেক্স-রঙিন মোমবাতি দেখে অনেকেই আলোচনা করছেন, ‘ওরা টাকা পায় কোথা থেকে?’ আন্দোলনে নামলেই তো হল না। মাইক-ফ্লেক্স-জল-মোমবাতির খরচ রয়েছে। আপাতভাবে এই প্রশ্নের উত্তর—‘ক্রাউড ফান্ডিং’। কিন্তু ‘ক্রাউড’-এর মধ্যে আবার অসাধু চক্রর আনাগোনার খবর মিলছে। সঙ্গে উঠছে প্রশ্ন—এই ফান্ডিং আদৌ ‘জাস্টিসে’র জন্য ব্যবহার হচ্ছে তো?
আগামী রবিবার মহামিছিলের ডাক দিয়েছে ‘আমরা তিলোত্তমা’ নামে একটি সংগঠন। সেখানে টলিউডের তারকারাও থাকছেন। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, ‘মহামিছিলের নামে টাকা তোলা হচ্ছে।’ তাঁরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে টাকা চাওয়া হয়নি। হচ্ছে না।’ জনগণকে তাঁদের সতর্কবার্তা, কেউ টাকা নিয়ে থাকলে, বা চাইলে আমাদের জানান। ‘আমরা তিলোত্তমা’র সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সোহিনী সরকার, বিদীপ্তা চক্রবর্তীর মতো তারকা। তাঁরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় সাবধানবাণী দিয়েছেন। রবিবারের মহামিছিলের অন্যতম উদ্যোক্তা মধুরিমা গোস্বামী বলছিলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভোররাতে আমাদের কাছে এই অভিযোগ আসে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হই। আসলে একটি সংগঠন রাস্তায় আঁকার জন্য চাঁদা তুলছে। যেহেতু অনেকে জেনে গিয়েছেন, এই ধরনের কাজের জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে, তাই কেউ সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে।’ কী বলে টাকা চাওয়া হচ্ছে? মধুরিমার অভিযোগ, ‘ওঁরা বলছেন, রবিবারের মহামিছিলের জন্য জল-মাইক লাগবে। তাই আপনারা টাকা দিন। আমরা এখনও কারও নাম জানতে পারিনি। তাই সামগ্রিকভাবে বার্তা দিয়েছি।’ তবে অভিযোগ কিন্তু এক নয়, একাধিক। পিছনে কি বদনামের অভিসন্ধি রয়েছে?
নজর করার মতো বিষয় হল, পাড়ায় পাড়ায় এরকম বহু গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। খুলেছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। তাঁরাও কিন্তু আন্দোলন জিইয়ে রাখতে ক্রাউড ফান্ডিং করছেন। উইকএন্ড এলেই বেড়ে যায় আন্দোলনের স্রোত। তাঁদের বক্তব্য একটাই, ‘জাস্টিস’-এর জন্য আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। অনেক গ্রুপে জমা-খরচের হিসেবও প্রকাশ করা হচ্ছে। কিন্তু একথা বলতেই হয়, ‘ভালো’ মানুষের ভিড়ে ‘মুখোশ’ পরে অসাধুরাও ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামেননি তো? প্রশ্ন উঠছে।