চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত কিভাবে এর সমাধান হবে তাও অনেকেরই অজানা। প্রাকৃতিকভাবে এই উপায়ে চুল হবে ঘন কালো ও মজবুত।
চুল পড়ার সমস্যায় কি আপনি নাজেহাল? প্রায় অনেক রকম শ্যাম্পু বা অন্যান্য হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে ফেলেও কোনও কাজ হচ্ছে না! তাহলে কী করবেন এখন? ঘরোয়া উপায়েই ফিরে পান ঘন কালো চুল। চুল পড়ার সমস্যা বন্ধ হয়। জেনে নিন বিস্তারিত…
চুল পড়ার সমস্যা নিয়ে আমরা কম বেশি সবাই ভুক্তভোগী। দেখুন দিনে ১০০ টা পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক। সারাদিনে ৫০-১০০টা চুল পড়তেই পারে। আবার সেই জায়গায় নতুন চুলও গজিয়ে যায়। কিন্তু সমস্যা দেখা যায় তখনই, যখন চুল পড়ার পর আর নতুন করে চুল ওঠে না। বা অত্যাধিক চুল পড়তে থাকে।
এই চুল পড়া বন্ধ করার জন্য নানা পদ্ধতি আমরা মেনে চলি। কখনও দামি দামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করি। কখনও বা ঘরোয়া উপায়ও কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। আসলে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আমাদের আগে জানা প্রয়োজন যে, কেন চুল পড়ছে? চুল পড়ার কারণ কী? সেই মতো ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে চুল পড়া বন্ধ করতে পারেন আপনি।
চুল পড়ার অন্যতম কারণ জিনগত হতে পারে। কোনও মহিলা কিংবা পুরুষের নির্দিষ্ট বয়সের পরেই চুল পড়ার সমস্যা হলে এবং তাঁদের বংশে সেই বিষয়টি আগেও দেখা যায়, তবে সেটিকে বংশগত সমস্যা বলেই ধরা যেতে পারে।
শরীরে হরমোনের হঠাৎ পরিবর্তনেও চুল ওঠার সমস্যা হতে পারে। সেই কারণে প্রেগনেন্সি বা প্রেগনেন্সির পরে চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। কারণ, গর্ভাবস্থা, প্রসব বা মেনোপজের পরও হরমোনের তারতম্য কারণে চুল উঠতে পারে।
এছাড়াও কোনও শারীরিক সমস্যা বা কঠিন অসুখ করলেও চুল পড়ে যায়। দুশ্চিন্তা থেকেও চুল উঠতে পারে আপনার।
স্ক্যাল্প অপরিষ্কার রাখলে ও স্ক্যাল্পে কোনও ইনফেকশন হলে, তা থেকেও চুল পড়তে পারে আপনার।
চুল পরিচর্যায় অন্যতম উপাদান হিসেবে প্রাচীন যুগ থেকেই নিমের ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এমনকী আয়ুর্বেদেও নিমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চুলের বৃদ্ধিতে কাজে আসে এই নিম। নিমে উচ্চমাত্রায় ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। যা স্ক্যাল্পে জন্য খুবই প্রয়োজন। স্ক্যাল্পে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন বন্ধ করে। চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে নিম।
১০-১২টা নিম পাতা নিন। সেই পাতাগুলো বেটে নিন। পাতা থেকে বের করে নিন নির্যাস। এটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান হিসেবে স্ক্যাল্পে কাজ করবে। নিমপাতার এই মিশ্রণের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল বা নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। সেটি সামান্য গরম করে নিয়ে স্ক্যাল্পে মাসাজ করেন।
পেঁয়াজের রস নতুন চুল গজানোয় খুবই কাজে আসে। তাই আপনিও এই পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন স্ক্যাল্পে। এছাড়াও স্ক্যাল্পের কোনও ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে পেঁয়াজের রস। পেঁয়াজের রসে থাকা উপাদান চুল ঘন করে। এতে আছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান এবং অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস।
একটি বড় পেঁয়াজ নিয়ে তা থেকে রস বের করে নিন। এই পেঁয়াজের রস আপনি সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগাতে পারেন। আবার চুলেও লাগিয়ে নিন। চুলের ডগাতেও লাগাতে ভুলবেন না।
এই রস স্ক্যাল্পে লাগানোর সময় হালকা মাসাজ করতে পারেন। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এক মাসেই পার্থক্য নজরে আসবে আপনার।
চুল পড়া বন্ধ করতে খুবই কাজে আসে জবা ফুল। চুলের সমস্যা, খুশকি, শুষ্কতা, থেকে চুলকে রক্ষা করে। চুলকে ঘন এবং শক্তিশালী করে তুলতে জবা ফুল খুবই উপযোগী। জবা ফুল প্রাকৃতিক উপাদান। তাই যে কোনও ভাবে এটি চুলে ব্যবহার করা নিরাপদ বলেই মনে করা হয়। চুল সহজেই ভেঙে যাওয়া রোধ করে এই ফুল।
৭টা মতো জবা ফুল নিন। একই পরিমাণে জবা গাছের পাতাও নেবেন। আধ কাপ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। তেল ঠান্ডা হওয়ার পর সেই তেল স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। চুলেও লাগিয়ে নেবেন। আধ ঘণ্টা রেখে সালফেট ফ্রি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।