শীতে তো পালং শাক খাবেনই! কিন্তু এটি খেলে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে, সেটি কি জানেন

শীতকালে ঘরে ঘরে পালং শাক খাওয়া হয়, পালঙ্গের বিভিন্ন রকম রেসিপি তৈরি করেও খাওয়া হয়।। সুস্বাদু এই শাক খেতে কম বেশি সকলেই ভালবাসেন।কিন্তু এই পালং শাকের হাজারো গুনাগুন রয়েছে সেগুলি কি জানা রয়েছে যদি জানা না থাকে তাহলে জেনে নিন :

পালং শাকের পুষ্টিগুণ: প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রোটিনের পরিমাণ ২.০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২.৮ গ্রাম, আয়রন ১১.২ মি. গ্রাম, ফসফরাস ২০.৩ মি. গ্রাম, নিকোটিনিক এসিড ০.৫ মি. গ্রাম, অক্সালিক এসিড ৬৫২ মি. গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৭৩ মি. গ্রাম, পটাশিয়াম ২০৮ মি. গ্রা। এতে আঁশের পরিমাণ ০.৭ গ্রাম। এতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। এতে ভিটামিন-এ আছে ৯৩০০ আইইউ, রিবোফ্লোবিন ০.০৮ মি. গ্রাম, ভিটামিন সি ২৭ মি. গ্রা, ও থায়ামিন ০.০৩ মি. গ্রাম।
রক্তচাপ কমায়: পালং শাকে রয়েছে থাকা উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম। এর ফলে নিয়মিত পালং শাক খেলে তা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। যাঁরা রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন, এই শাক তাঁদের জন্য খুবই কাজের হতে পারে।

ওজন কমাতে: যদি কম ক্যালরি যুক্ত খাবার বাছাই করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি পালং শাককে বেছে নিতে পারেন। কারণ প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ক্যালোরি রয়েছে মাত্র ৭ কিলোক্যালরি যা আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে, তাঁদের ভালোভাবে জীবনযাপন করাটা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনেকে আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের ভয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে ভয় পান। যেহেতু পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নির্ভয়ে খেতে পারেন শাকটি।

চোখ ভালো রাখতে পারে: বিভিন্ন প্রকার সবুজ শাক সবজিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইটোকেমিক্যাল থাকে যা আমাদের দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি হতে বাধা দেয়। পালং শাকে উচ্চ মাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকায় তা আমদের চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: পালং শাকে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ, বলিরেখা পড়া ইত্যাদি দূরীকরণেও বেশ কার্যকর। এছাড়া এটা ত্বকের বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে ধীর করে এবং ত্বককে নরম ও স্থিতিস্থাপক অবস্থা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

ক্লান্তিভাব দূর করে: পালং শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার আয়রন যা দেহে অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য খুবই জরুরী। এছাড়া এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ভিটামিন সি ও ই কে তরান্বিত করে আমদের পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এতে আমাদের শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। এছাড়া এই সবজি আমাদের রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।

প্রদাহ জনিত সমস্যা রোধ করে: পালং শাকে রয়েছে নিওজেন্থিন নামক উপাদান যা প্রদাহ নিরাময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যাঁদের জয়েন্টে ব্যাথার সমস্যা আছে, তাঁরা অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এটি রাখতে পারেন এবং উপকৃত হতে পারেন।

হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে: পালংশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিনেজা সুস্থ কার্ডিয়োভাসকুলার সিস্টেমের জন্য খুবই জরুরি। তাই হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে সহজলভ্য সবজিটি আমাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিতভাবে রাখা দরকার।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: এই সবজিতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ-সহ রোগ প্রতিরোধী রক্তের শ্বেত কণিকার সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। ফলে দেহ বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা পায়।

ক্যানসারের বিরুদ্ধে কাজ করে: পালং শাকে রয়েছে ১০টিরও বেশি ভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড যা ভয়ানক রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই পলিনিউট্রিয়েন্টস গুলো দেহের ফ্রি রেডিকেলকে নিরপেক্ষ করে। ফলে দেহ থাকে ক্যানসারের আক্রমণ থেকে ঝুঁকিমুক্ত।

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন প্রকার শাক-সব্জি থাকা এক কথায় বাঞ্ছনীয়। কারণ শাক সবজি ছাড়া সুষম খাবারের শর্তই পূরণ হয়না। আমাদের সবারই উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক সবজি রাখা। তাই সুষম খাদ্য উপাদান হিসাবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পালং শাক হতে পারে একটি আদর্শ সবজি।

Asia News https://asianewslive.in

Asia News is a digital news platform that brings Asia to the global online audience.

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours