চা উৎপাদনে যথেচ্ছ রাসায়নিকের ব্যবহার কার্যত বিপদ ডেকে আনছে নাতো? সম্প্রতি টি বোর্ডের (Tea Board) নির্দেশিকায় স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ফ্যাসাই এর নিয়মের বাইরে বিনা অনুমোদিত রাসায়নিক ব্যবহার করে চা উৎপাদন হলে সেই চা পান কার্যত বিষপান। ফলে উৎপাদকদের নির্দিষ্ট অনুমোদিত রাসায়নিকের ব্যবহারে পরামর্শ দিয়েছে তারা। এতদিন যেসব রাসায়নিক আকছার ব্যবহার হত এমন কুড়িটি রাসায়নিক ব্যবহারে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। নতুন করে অনুমোদন পেয়েছে ৩৩টি রাসায়নিক পদার্থ।
বড় বাগানগুলির স্পষ্ট ইঙ্গিত, ছোট চা বাগান ও বিটলিফে উৎপাদিত চা অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ রাসায়নিকের ব্যবহারে গুণমান হারাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে টি ওয়েস্টের যথেচ্ছ ব্যবহার বিপদ ডেকে আনছে। যদিও বটলিফ ফ্যক্টরি মালিকদের সংগঠনের দাবি, বছরে তিনবার বটলিফে উৎপাদিত চা টি বোর্ডে পাঠানো হয় টেস্টিং এর জন্যে। তাতে গুনমান না থাকলে এবং অবৈধ রাসায়নিকের ব্যবহার ধরা পরলে সেই উৎপাদিত চা বিক্রির ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত হতে পারে। কিন্তু এটা ঠিক, ছোট্ট ছোট্ট বাগানগুলি কিভাবে চা উৎপাদন করছে, কি রাসায়নিক ব্যবহার করছে তা বটলিফ কারখানা গুলির পক্ষে দেখা সম্ভব না। এক্ষেত্রে টি বোর্ডকেই তাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। বটলিফ কখনও এই অবৈধ রাসায়নিকের ব্যবহারে প্রশ্রয় দেয় না। অতীতে কিছু ক্ষেত্রে অবৈধ রাসায়নিক ব্যবহারের জেরে উৎপাদিত চা বাতিলও হয়েছে। কিন্তু ভিজিল্যান্সে জোর দেওয়ার পরিকাঠামো আরো শক্তিশালী করতেই হবে।
তরাই ও ডুয়ার্সের বাগান মালিকদের সংগঠন TAI এর তরফে সুমিত ঘোষ বলছেন, বড় বাগান যাবতীয় নির্দেশ মেনেই চলে। উৎপাদিত চা প্যাকেজিং এর ফ্যাসাই অনুমোদিত রাসায়নিক চগাড়া অন্য রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে না উল্লেখ করেই বাজারজাত হয় উৎপাদিত চা। কিন্তু খোলা বাজারে অবৈধ রাসায়নিকের ব্যবহার করে উৎপাদিত চা কোথা থেকে আসছে সেসব মনিটরিং টি বোর্ডকেই করতে হবে। পাশাপাশি, শুধু রাসায়নিকের ব্যবহারে বিধিনিষেধ আনলেই হবে না। বহু ক্ষেত্রে ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে অনুমোদিত রাসায়নিক আদৌ কাজে আসছে কিনা সেসব নিয়ে নিরন্তর স্টাডিও দরকার। চা উৎপাদকেরা কেউ বিধি অমান্য করলে তার শাস্তি হোক।