বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনের প্রচার আজ মেদিনীপুর থেকে শুরু করলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আজ, শনিবার বেলদা স্টেডিয়ামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করছেন। মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার হয়ে আজ পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রথম প্রচার শুরু করছেন তিনি।
নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মায়েরা যাঁরা বাড়ির কাজকর্ম ছেড়ে আমাদের সভায় এসেছেন, তাঁদের প্রণাম। মাতৃশক্তি না-জাগলে এ পৃথিবী জাগে না। নবজোয়ারের সময় আমি যখন অবিভিক্ত মেদিনীপুরে এসেছিলাম, প্রত্যেক বিধানসভায় পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। বলেছিলাম, নারায়ণগড় দিয়ে প্রচার শুরু করব। শুরু করলাম। আমি আগে থেকে জানতাম না যে, আজই নির্বাচন ঘোষণা হবে। কী করে জানব, যে দিন নির্ঘণ্ট প্রকাশ হবে, সে দিনই আন্দোলনের পীঠস্থান মেদিনীপুরে থাকব! এটা সৌভাগ্যের।আমি বলছিলাম, বাংলা মাথা ঝোঁকাবে না। আজকের এই সভা সেটাই প্রমাণ করছে। ২০১১ সালে মা-মাটি-মানুষের সরকার তৈরি হয়েছে। তার আগে মেদিনীপুরের মানুষ সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আত্মবলিদান দিয়েছেন।’
মোদী সরকারকে তোপ দেগে এদিন তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে মানুষ ভুল করে না। মানুষ যদি বিজেপিকে ভোট দেন, সেই রায় আমরা মাথা পেতে নেব। শুধু নিজের অধিকার সামনে রেখে ভোট দেবেন। আজ আপনাদের বলি, দু’মাস রাস্তায় ছিলাম। এক দিন বাড়ি যাইনি। ঘর-পরিবার-স্ত্রী-সন্তান সবাইকে ছেড়ে রাস্তায় ছিলাম। ১০০ দিনের কাজের টাকার জন্য আন্দোলন করেছিলাম। আপনারা টাকা পেয়েছেন কি না বলুন? একটা ভোটের দাম কী? আমি বলি, যাকে ইচ্ছা ভোট দিন। কিন্তু ভোটটা দিন। দিলীপ ঘোষ যে জিতেছিলেন, তার পর পাঁচ বছরে সাত বিধানসভা কেন্দ্রে যদি একটা উন্নয়নমূলক বৈঠক হয়েছে বলে দেখাতে পারেন, তা হলে আমি আর ভোট চাইতে আসব না। এত বড় কথা বলে দিয়ে যাচ্ছি। অন্য দিকে দেখুন মুখ্যমন্ত্রীকে। কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। আমরা ত্যাগ করছি। ওরা গ্রহণ করছে। কোনও ভদ্রলোক বিজেপি করে না। দেখুন না এদের চরিত্র। সব চোর, চিটিংবাজ, দু’নম্বরী, দুর্নীতিগ্রস্ত, পাতাখোর, মাতাল— সব বিজেপিতে। এরা সব সিপিএমের প্রোডাক্ট। মদের বোতলটা নতুন। মদ পুরনো।’
দিলীপ ঘোষকে নিশানা করে এদিন অভিষেক বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ কি পরিষেবা দিয়েছে আপনারা দেখেছেন। সকালবেলা খালি মর্নিং ওয়াক ওঁর কাজ। খালি মর্নিং ওয়াক করছেন। চা খান। চায়ে আপত্তি নেই। শরীরচর্চা আর মর্নিংওয়াক যিনি করছেন তাঁকে সাংসদ করবেন নাকি যে মেয়ে রাস্তায় লড়বেন, তাঁকে সংসদে পাঠাবেন? শপথ নিন, মর্নিং ওয়াক করা দাদা পার্কে থাক, বাংলার মেয়ে দিল্লি যাক। এদের বলার ক্ষমতা নেই। খালি মিথ্যে কথা বলবে। ২০১৮ সালে জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী সভা করতে এসে মেদিনীপুরে কত মিথ্যা কথা বলেছেন! একটা কাজ করেনি— দেখুন ভিডিয়ো’ এরপরেই তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ বার বার নারীশক্তিকে আক্রমণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে অসম্মানজনক কথা বলেছেন। তিনি কুড়মি সম্প্রদায়কে অসম্মান করেছেন। আমাদের বিবেকে বাধবে ছ’মাস কাজ করিয়ে কাউকে পারিশ্রমিক না-দিয়ে বার করে দিতে। এরা ১০০ দিনের কাজের বেলা তাই করেছে। অনেক হয়েছে। এদের দয়া এবং দাক্ষিণ্যে আর বাঁচব না। এঁদের কাছে আর কিছু চাইবেন না। এঁদের কাছে মাথা নীচু করে বেঁচে থাকবেন না। প্রতি বছর ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে বাংলার মহিলাদের জন্য। এর ১০ পয়সা মোদী সরকারের নয়। তাই ১০০ দিনের কাজও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিতে পারবেন। তাই বাংলাকে জেতান। মেদিনীপুরে জুন মালিয়াকে জয়ী করুন। আবাসের জন্য কারও উপর নির্ভর করতে হবে না। আমরা করব।’