লোকসভা ভোটের (Loksabha election) দামামা বেজে গিয়েছে। ব্যারাকপুরে ফের প্রকাশ্যে সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh) এবং জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের দ্বন্দ্ব। ব্যারাকপুর থেকে অর্জুনকে যেন কোনভাবেই লোকসভা ভোটে লড়ার টিকিট না দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থায় করতে চাইছে শ্যাম। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিচ্ছেন তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ। অর্জুনকে এলাকাবাসী সাংসদ হিসাবে চাইছেন না, এই বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতেই ‘প্রমাণ’ হিসাবে নিজের বিধানসভা এলাকায় কিছু মানুষের সই সংগ্রহ করেন সোমনাথ শ্যাম। খোদ বিধায়ক এশিয়া নিউজকে জানান, সেই সব সই সংবলিত চিঠি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠাবেন।
আগেও প্রকাশ্যে অর্জুন সিংকে টিকিট না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন সোমনাথ এবং সুবোধ। অর্জুনের নাম না করে সোমনাথ বলেছিলেন, ‘খুনি পরিবারকে যেন টিকিট না দেওয়া হয়। দলের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছি।’ এদিন সোমনাথ শ্যাম জানান, ‘আজকের এই চিঠিতে সকলে এই কথাই লিখেছে এখন থেকে এমন কোন মানুষ যেন ভোটে না দাঁড়ায় যে সাধারণ মানুষের ওপর দিনের পর দিন অত্যাচার করেছে, রাজনীতিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছে। যারা এখনো দুই নৌকায় পা দিয়ে চলছে, যাদের পরিবারের সদস্যরা একজন এই দলে আরেকজন অন্য দলে এই ধরণের কোন মানুষকে যেন ব্যারাকপুর লোকসভা থেকে প্রার্থী না করা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসে অনেক লোক আছে যারা প্রার্থী হওয়ার যোগ্য। তেমন ভালো কোন মানুষকেই যেন প্রার্থী করা হয় সেই আর্জি আমার কাছে এসেছে।’ তিনি বলেন, আমাদের দলে দুজনই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, এক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যজন সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের আদেশ আমরা মাথা পেতে নিই। ওনাদের আদেশ মেনেই আমরা চলবো। আমরা দাবি জানালাম, বাকিটা তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’
প্রসঙ্গত, ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আর এক বিধানসভা কেন্দ্র আমডাঙায় অর্জুনের সমর্থনে বেশ কিছু পোস্টার পড়েছে। সেগুলিতে লেখা হয়েছে, ‘অর্জুন সিংহকেই প্রার্থী চাই।’ আগেও তৃণমূল সভাপতি গোপাল মজুমদার খুনের ঘটনার ফাইল ওপেন করে মূল চক্রীকে গ্রেফতারের দাবিতে মুখ খুলেছিলেন জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই বিধানসভায় এসে একই দাবি রাখেন সোমনাথ শ্যাম। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অর্জুন সিং। কিন্তু ভ্রম কাটতেই তিন বছরের মধ্যে আবার তৃণমূলে ফেরেন। অন্যদিকে সোমনাথ শ্যাম কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসেন। তারপর থেকেই দুজনের মধ্যে সংঘাতের শুরু হয় এবং মাঝে মধ্যেই সেটা বেশ প্রকট হয়ে উঠছে।
কাউন্সিলর সোমনাথ তালুকদার এই বিষয় পাল্টা শ্যামকে তোপ দেগে বলেন, ‘এই ব্যাপারে কথা বলার জায়গা নেই। আমরা যারা তৃণমূলের সৈনিক তারা জানি লোকসভা বা বিধানসভার প্রার্থী ঠিক করেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কে প্রার্থী হবেন সেই নিয়ে প্রশ্ন করার অধিকার নেই। এটা ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা। তারপরেও যদি কেউ বলেন একে প্রার্থী চাই, বা একে চাইনা সেটা সংবিধান বিরোধী এবং পার্টির ডিসিপ্লিন ভাঙছে বলেই মনে করি। এটা এক্তিয়ার বহির্ভূত কাজ।’