রাশিয়ার পারমাণবিক বোমা
১৯৬১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এমন একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়, যার বিস্ফোরনের সৃষ্ট স্ফুলিঙ্গ প্রায় ১০০ কিলোমিটার বিস্তৃত হয়ে ৬৪ কিলোমিটার উচ্চটায় পৌঁছে যায়। বিস্ফোরনের সৃষ্টির অগ্নিগোলকটির ঝলকানি ১০০০ কিলোমিটার দূরথেকে দেখা যায়, ৪.৫ মাত্রায় ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়, বিচ্ছিন্ন হয় বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থা। এটা এখনো পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে ভয়ানক মরণাস্ত্র। ২০২২ সালে রাশিয়ায় ইউক্রিয়েন আক্রমণ করলে সবাই ভেবেছিলো ইউক্রিয়েন হয়তো পরাজিত হবে। কিন্তু এখনো বিজয় নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ রাশিয়া। এরমধ্যেও ন্যাটো সদস্যপদ এবং যুদ্ধবিমান F16 পেয়ে গেলেই সম্ভবত পারমাণবিক যুদ্ধ দেখবে গোটা বিশ্ব। যুদ্ধ আরো দীর্ঘায়িত হলে এবং যুদ্ধের ফল নিজের অনুকূলে না পাওয়া গেলে ব্লাতিমির পুতিন পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করতে পারেন বলে অনুমান। পারমাণবিক বোমা যে কতটা বিধ্বংশী হতে পারে তা আমরা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধএর সময় দেখেছি। তবে এখনকার শক্তিশালী পারমাণবিক বোমাযুক্ত দেশ গুলির মধ্যে রাশিয়া অন্যতম। তাদের এমন একটি বোমার নাম “জার” বোমা। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের জাপানের দুটি শহর ধ্বংস করা “লিটল বয়” আর “ফ্যাটমায়ানের” চেয়ে “জার” বোমা কয়েক লক্ষ্গুন শক্তিশালী এই পারমাণবিক বোমটি। প্রকৃতপক্ষে “জার” বোমা হলো বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। ১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও হাইড্রোজেন বোমার তৈরী করতে মনোনিবেশ করে। এই “জার” বোমার ওজন এতো বেশি এটা বিস্ফোরণ হলে সেই বিমানও নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। প্রথমে “ফ্যাটমন” এর চেয়ে ৫০০০ গুন শক্তিশালী এই “জার” বোমা। বোমাটি তৈরী করার পর এর ওজন দাঁড়ায় ২৭ মেট্রিক টন যা লম্বায় ৮ মিটার এবং যার প্রস্থ ২ মিটার। এমনকি এই বোমা নিয়ে যাওয়া বিমানের চালকের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও খুব কম। বিস্ফোরণ হলে বায়ুমন্ডলের স্তর স্টেটোসফিয়ার ছাড়িয়ে মেসোস্ফইয়ার এ পৌঁছে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এই “জার” বোমা পৃথিবীর যেকোনো শক্তিশালী দেশকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এর বিষক্রিয়ায় মারা যেতে পারে কোটি কোটি প্রাণ।