মোদীর (Narendra Modi) স্বপ্ন অনুযায়ী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত উন্নত রাষ্ট্র হতে পারবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে রঘুরাম রাজন নিজের বক্তব্যে স্পষ্ট করে দিলেন, ‘এই ধরনের কথা ভাবা বোকামি হবে।’ রঘুরাম রাজন ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে বলেন, ‘ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে যে ‘হাইপ’ উঠেছে, তা বিশ্বাস করা ঠিক হবে না।’ রঘুরাম রাজন বলেন, ভারতের যে ভারতকে প্রথমে তাদের ‘কর্মীবাহিনীকে’ আরও বেশি কর্মসংস্থানযোগ্য করে তুলতে হবে এবং তারপরে তাদের কর্মশক্তির জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।
রঘুরাম রাজন বলেন, ‘ভারতের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল ভবিষ্যতের কর্মশক্তির শিক্ষা এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা। যে হাইপ উঠেছে, সেটিকে বাস্তবে পরিণত করতে আমাদের আরও অনেক বছর কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বর্তমানে এই প্রচার করা হচ্ছে যাতে সবাই তা বিশ্বাস করে। এমন কিছু রাজনীতিবিদ আছেন, যাঁরা চান যে আপনি এই হাইপটি বিশ্বাস করেন। কিন্তু এই হাইপকে বিশ্বাস করে ভারত যদি নতি স্বীকার করে, তাহলে তা মারাত্মক ভুল হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত কোনও ভবেই উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারবে না। যে দেশে এখনও এত সংখ্য শিশুর কাছে হাইস্কুল নেই, যেখানে স্কুল ছাড়ার হার এত ওপরে, সেখানে দাঁড়িয়ে এই ধরনের কথা বলা অর্থহীন। এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয় এই সময়কালের মধ্যে।’
আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর এই মর্মে বলেন, ‘আমাদের দেশে ক্রমবর্ধমান কর্মীবাহিনী আছে। কিন্তু তারা যদি ভালো চাকরিতে নিযুক্ত হন তবেই তা দেশের অর্থনীতির জন্যে লাভের হবে। তবে আমার মনে হয়, এটা তত সহজে হবে না। কারণ কোভিডের পরে পড়ুয়াদের সেখার ক্ষমতা কমে গিয়েছে বলে দাবি করছে বিভিন্ন গবেষণা। এটা এমন একটি পরিসংখ্যান যা সত্যিই উদ্বেগের। মানবসম্পদের অভাব আমাদের সাথে আরও কয়েক দশক ধরে থাকবে। সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির দিকে না নজর দিয়ে চিপ উৎপাদনের মতো বিষয়ে বেশি মন দিচ্ছে। সরকার সত্যি চাইছে ভারতকে বৃহৎ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। তবে তার জন্যে আসলে কী করতে হবে, সেটার দিকে সরকার তাকাচ্ছে কি না, সেটাই প্রশ্ন। আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে।’