মাসুদ হোসেন, ঢাকা: উইঘুর মুসলিমদের (Muslim) ওপর চীন সরকারের (China Government) গণহত্যার প্রতিবাদে মুসলিম দুনিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠতে শুরু করেছে। দাবি উঠছে, সবধরণের চীনা পণ্য বর্জনের। সেইসঙ্গে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য মামলা করারও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, উইঘুরদের ধর্মীয় স্বাধীনতা পুরোপুরি লুন্ঠিত। পবিত্র ঈদে নামাজ পড়া বা রোজা রাখার স্বাধীনতাটুকুও তাদের নেই। বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শতাধিক মসজিদ। তাই বাংলাদেশেরও বহু মুসলিম চাইছেন, চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে।
শুধু মুসলিম দুনিয়াই নয়, চীনে উইঘুরদের ওপর চলমান গণহত্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন কংগ্রেসের একটি কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএর মানবতা বিরোধী অপরাধের কথা। কানাডা তো আগেই বলেছে, চীনে গণহত্যা চলছে। উইঘুর জাতিটাকেই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দিতে চাইছে চীন।
অর্থনীতিবিদদের মতে, গোটা দুনিয়ার মুসলিমরা যদি চীনকে বর্জন শুরু করে তাহলে সে দেশের অর্থনীতিতে ধস নামবে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন দেশে বাড়ছে চীন বিদ্বেষ। কারণ কমিউনিস্টশাসিত দেশটি মুসলিমদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী ২০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে তারা তারা ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করে রেখেছে। তাদের অবিলম্বে মুক্ত জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সরব আন্তর্জাতিক দুনিয়া। সেইসঙ্গে উইঘুর মুসলিমদের ক্ষতিপূরণেরও দাবি করেছে বিভিন্ন মানবতাবাদী সংগঠন। অনেকেই মনে করেন, অবিলম্বে মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকেই চীনের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে। তাই সাধারণ মানুষকেও এবিষয়ে সচেতন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কমিউনিস্ট শাসিত চীনের পশ্চিমাঞ্চল জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় উইঘুরদের মূল বাসভূমি। ১৯৪৯ সালে এই অঞ্চলটি জোরপূর্বক দখলে নেয় চীন। তারপর থেকেই চীন সরকার উইঘুর মুসলিমদের উপর অনবরত গুম, ধর্ষণ, নির্যাতন, জোরপূর্বক কাজ করানো, মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব করণে বাধ্য করা ও গণহত্যার মতো মানবতা বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। চীনে গণমাধ্যমের বিন্দুমাত্র স্বাধিনতা নেই। তাই উইঘুরদের প্রকৃত দুর্দশার কথা প্রকাশের তেমন কোনও রাস্তা নেই। তবে সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম অনেকেই চীনে মুসলিমদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনেও উইঘুরদের ওপর চীন সরকারের জুলুমবাজির তথ্য উঠে এসেছে। চীনের এই মানবতাবিরোধী কার্যকলাপে জাতিসংঘও উদ্বিগ্ন।