সুমনা আদক: আজ পঁচিশে বৈশাখ, তুমি (Rabindranath Tagore) অন্তরে ছিলে আজও তুমি অম্লান, তোমার শেখানো চেতনার আলোতে স্নাত আপামোর ভারতবাসী থেকে বিশ্ববাসী, তুমি রয়েছো বাঙালির হৃদয়ের মনিকোঠায়। জ্ঞানের সাগরে ডুব দিয়ে একমাত্র মানিক্য খুঁজে পেয়েছিলে তুমিই-সেখানে পৌঁছাবে কার সাধ্য? সৃষ্টির অগ্রদূত রবি ঠাকুর যার “সোনার তরী” তে শুধুই অমূল্য রতন বোঝোই করা। বিশ্ববাসী জানে “Tagore” নামে। তাঁর লেখনীর ঝরে পরা প্রতিটি প্রেমে মুগ্ধ শতকোটি অগণিত শ্রোতা থেকে দর্শক।
সময়টা বদলেছে যে “হে মোর দুর্ভাগা দেশ” আজ এই অশান্ত পৃথিবীর হাহাকার দেখে গুরুদেব তোমার দুচোখেও হয়তো অশ্রুদারা, তোমার ভাবনার সেই মলিন দেশ যেখানে ধর্মের নামে, জাতির নামে, ভাষার নামে, আজ কতইনা বিভেদ, অর্থের প্রাচুর্য আর মারণ অস্ত্রের ঝনঝনানি, দিকে দিকে হাইড্রোজেন আর পরমাণু বোমার হুঙ্কার ধ্বনি আর হত্যালীলা, এক রাষ্ট্র থেকে আরেক রাষ্ট্র কলুষিত, এতো হংসা, বর্বরতা এতো নিষ্ঠুরতা দেখে হয়তো তোমার হৃদয়ও আজ ভারাক্রান্ত। একদল উম্মত পৈশাচিকতার নেশায় তোমার ভাবনার সেই সাজানো স্বপ্ন এখানে ভুলুন্ঠিত, একদল মোকসাবাদী বেরঙীন করেছে সেই পূর্ণিমার চাঁদকে, তাদের সেই উল্লাসের শিকার তোমার সৃষ্টি। তোমার রচনাকে ধার করে তাদের সেই কদর্য প্রয়াস, দেশ বাসীকে শেখানো তোমার মন্ত্র “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির” আজ ভুলতে বসেছে অনেকেই, এতো আস্ফালনের পরেও পারেনি তোমার কলমের আঁচড়ের দাগকে ফিকে করতে। বিশ্ব এখন আবার করনার কবলে প্রাণযাওয়ার উপক্রম, কারণ পৃথিবীতো বিমুখ এতো অগ্রগতির পরেও সে একা, অসহায় তার দিক গুলো বেরিয়ে পড়েছে প্রতিনিয়ত। যেন এক দমবন্ধ থেমে যাওয়া জীবন এখানে সবার। গুরুদেব কত বেদনা তোমার হৃদয়জুড়ে বলতো? তোমার চোখে দেখা সেই পৃথিবী গেছে আজ অস্তরাগে। অকাল বসন্তের সময় আজ, যেখানে সত্যিই তোমার বাণী কানে বাজে “বরিষ ধারা মাঝে শান্তির বাণী” চাইবো, তোমার ব্যাপ্তির আলোয় একেবারে ধুয়ে মুছে যাক যত আছে সেই সব গ্লানি গুলো। জীবন সসময় ই চলমান, তাই আবার আসুক সেই নুতন দিন যেখানে মানবপীড়ন মহামারী থেকে যেন আমরা বিজয়ী হই, যেখানে থাকবে পথভোলা পথিকের বাঁধ ভাঙা মুক্তির গান “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে”, থাকবে গুরুদেবের চরণে আমাদের বিনম্র মাথা, আর একরাশ শ্রদ্ধা সবাই একসাথে বলবে সেদিন —
“তব চরণে নত মাথা
জয় জয় জয় হে”