কিছুদিন আগেই শাড়ি পরা নিয়ে বিতর্কে (Controversy) জড়িয়েছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar)। ফের একবার এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনায় বসলেন তিনি। মেয়েদের ঠিক কিভাবে পোশাক পরলে সৌজন্যতা বজায় থাকবে এই নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করলেন তিনি। আঁচল নামিয়ে শাড়ি পরা মেয়েদের কটাক্ষ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রাস্তার মেয়ে’, ‘ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়ানো মেয়ে’-র মতো’ বেশ কিছু কথা।
এবার তিনি আরো স্পষ্ট করেই জানান ‘কেউ শুনলই না ভালো করে আমি কি বলেছি। আমি মান্ধাতার আমলের নই। আমি অত্যন্ত মডার্ন। কিন্তু আমার মনে হয় নিজের ডিগনিটিও রাখা উচিত। আমার মনে আছি আমি আর আমার বউদি তনুশ্রী, তখন আমার বয়স ১৫, আমেরিকান কনসুলেটের প্রোগ্রামে যেতাম খুব। সেখানে অভিনেত্রী জয়শ্রী রায় আসতেন। উনি শাড়ি পরতেন, ব্লাউজ ছাড়া। ভিতরে না পরতেন কোনও সায়া বা অন্তর্বাস। ওঁকে কিন্তু দেখে কখনও খারাপ লাগেনি। আচলটা কোনওদিন এক ফোঁটা সরত না। এত গ্রেসফুল ছিলেন মহিলা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারতবর্ষের পোশাক কিন্তু খুব আধুনিক। কোনও সাওতাঁল এলাকার হোক বা নাগালান্ডের মেয়েদের কথা হোক। মৃগয়াতে আমার পোশাক কী ছিল! আমার মা-বাবা কিন্তু কোনওদিন এই নিয়ে একটা কিছু কথা বলেননি। তাঁরা বেশ প্রাচীণপন্থী ছিলেন। সেই ট্রাইবটার প্রতি সম্মান দিয়ে আমার ওই পোশাক ছিল। নিজেকে জাহির করার জন্য নয়। আঁচল অনেকভাবে নেওয়া যায়। কিন্তু ব্লাউজটা! আমি খুব ভালো একটা সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম, যেখানে লেখা ছিল আঁচল নয়, ব্লাউজের জন্য এবং অন্তর্বাস এর জন্য অনেকটা দোষি। আমি যদি একটা ডিজাইনার ব্লাউজ পরি, আমার পিঠটা আছে তো ডিজাইনারের কাছে ডিজাইন করার জন্য। আর যদি মনে করলাম কোনও ব্লাউজের সামনে অনেক কাজ আছে। আমরা শাড়ির আঁচলটা সামনে থেকে নিতে পারি। সেরকম মানানসইভাবে পরলে, কেন খারাপ লাগবে।’
পৃথকভাবেই তিনি বুঝায়ে দেন ‘শারীরিক গড়নটাও দেখতে হবে। চেহারার সঙ্গে মানাচ্ছে কি না। আমি দোকানে গিয়েছি, রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছি, সেরকম কোনও ডিজাইনার ব্লাউজও পরিনি, আঁচলটাকে ওরকম ভাবে সরিয়ে… সেটা আমি নিতে পারিনি। আমার ডিজাইনারদের কাছে আর্জি আমাদের দেশে কত রকমের পোশাক আছে। যেগুলো রিভিলিং, কিন্তু খারাপ লাগে না! নাগা মেয়েদেরই দেখুন না কেন! আমাদের দেশে যেখানে এত ঐতিহ্য, আমাদের অন্যকে নকল করতে হবে কেন। কেউ বলবে আগেকার দিনে দেব-দেবীদের মূর্তিগুলি তো এরকমই ছিল। কাঁচুলি পরা কেন?’ নিজের পাশে রাখা একটি মূর্তিকে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার হাতের এইটাকে দেখো । এর গায়ে তো কিছুই নেই। কিন্তু এভাবে তো চাইলে আমি আর বেরিয়ে যেতে পারি না!’